Invention

আচমকা অসুস্থতায় একা রোগীকে শারীরিক সমস্যা জানাতে যন্ত্র উদ্ভাবন যাদবপুরের

আপৎকালীন চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে ওঠে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির দিশা দেখাতে পারে সম্প্রতি আবিষ্কৃত একটি যন্ত্র।

Advertisement
মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:১৬
যন্ত্রটি গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবন করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের গবেষকেরা।

যন্ত্রটি গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবন করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের গবেষকেরা। —ফাইল চিত্র।

অনেক সময়েই শোনা যায়, বাড়িতে আচমকা কেউ অসুস্থ বোধ করছেন। অথচ, সেই সময়ে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার মতো কেউ বাড়িতে নেই। এমন পরিস্থিতিতে রোগী নিজে যে চিকিৎসকের কাছে যাবেন, তা-ও সম্ভব হয় না। ফলে, আপৎকালীন চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে ওঠে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির দিশা দেখাতে পারে সম্প্রতি আবিষ্কৃত একটি যন্ত্র। বিপদের সময়ে নির্ভুল তথ্য বোঝার এই যন্ত্রটি গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবন করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের গবেষকেরা। ইতিমধ্যে তাঁরা এর স্বত্বও পেয়ে গিয়েছেন।

Advertisement

অন্যতম গবেষক সায়ন ত্রিপাঠী এবং ঝিলম জানার দাবি, ঘড়ির মতো এই যন্ত্রটি কব্জিতে বেঁধে রাখা যাবে। আচমকা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি নিজেই জানতে পারবেন, তাঁর ঠিক কী ধরনের শারীরিক সমস্যা হয়েছে। এমনকি, সেই সময়ে শরীরের বিভিন্ন মাপকাঠি যেমন, হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ, নাড়ির গতি, শরীরের তাপমাত্রা ইত্যাদির তথ্যও নির্ভুল ভাবে জানাবে এই যন্ত্র। ‘ইন্টেলিজেন্ট সিকিয়োর হেল্‌থ মনিটরিং ডিভাইস-২৪’ (আইএসএইচএমডি-২৪) নামের এই যন্ত্রটির তথ্য জানানোর পিছনে কাজ করবে মেশিন লার্নিং পদ্ধতি।

গবেষকদের দাবি, আমেরিকান হেল্‌থ অ্যাসোসিয়েশনের নির্দিষ্ট করে দেওয়া কিছু বিষয় (প্যারামিটার) অনুযায়ী যন্ত্র জানিয়ে দেবে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ঠিক কী ধরনের শারীরিক সমস্যা হয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে চিকিৎসকের কাছে সেই তথ্য পৌঁছে যাবে। এর জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি অ্যাপ। সেই অ্যাপে থাকবে চিকিৎসকদের তালিকা। ওই মুহূর্তে কোন কোন চিকিৎসককে পাওয়া যাবে, তা দেখানো হবে অ্যাপে। রোগী সেই মতো সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। ওই চিকিৎসকও দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন। পাশাপাশি, নির্দিষ্ট শারীরিক সমস্যায় রোগীর আগেই ডাক্তার দেখানো থাকলে তিনি নিজেও ওষুধ খেতে পারবেন।

সায়ন বলেন, ‘‘আমরা মূলত গ্রামাঞ্চলে, যেখানে চিকিৎসক এবং রোগীর অনুপাতে অনেক ফারাক, সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই এই যন্ত্র তৈরির গবেষণা শুরু করেছিলাম। ইতিমধ্যে আমরা এর স্বত্ব পেয়ে গিয়েছি। কিছু দিনের মধ্যেই ন্যানো ওয়াচ মডেলের আদলে বাজারে আসবে এই যন্ত্র। দাম পড়বে তিন হাজার টাকার মতো।’’ তাঁর দাবি, এই যন্ত্রের ক্ষেত্রে রোগীর তথ্য একমাত্র রোগী আর চিকিৎসকই জানতে পারবেন। তৃতীয় ব্যক্তির কাছে সেই তথ্য যাওয়ার সুযোগ থাকবে না। কারণ, এই যন্ত্রের ব্যবহারকারীকে সর্বপ্রথম যন্ত্র ব্যবহারের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

মূল গবেষণায় সায়ন এবং ঝিলমের সঙ্গে ছিলেন ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের শিক্ষক জয়দেব ভৌমিক। তাঁদের সঙ্গে গবেষণায় সহায়তা করেছেন শিক্ষক চিন্ময় ঘড়াই এবং গবেষক আসফাক আলি। গবেষণায় আর্থিক সহায়তা করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনস, ইনোভেশন কাউন্সিল।

আরও পড়ুন
Advertisement