Mayor Firhad Hakim

কলকাতা পুরসভায় অস্থায়ী কর্মীদের দুই বিভাগ থেকে বেতনের একাধিক ঘটনা, কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত মেয়রের

কলকাতা পুরসভার স্থায়ী কর্মীদের যাবতীয় তথ্য রয়েছে পুর কর্তৃপক্ষের হাতে। তবে বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত অস্থায়ী কর্মী সম্পর্কিত কোনও তথ্যভান্ডার নেই। অথচ প্রতি মাসে বিপুল টাকা ব্যয় হয় এই অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৪ ১৯:৩৯
Multiple incidents of salary from two categories of temporary workers in KMC, Mayor Firhad Hakim hints at strict action

ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা পুরসভার অস্থায়ী কর্মী, কাজ করছেন দু’জায়গায়। আর দু’জায়গা থেকেই প্রতি মাসে তাঁদের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে বেতন! এমন ঘটনা ঘটেছে কলকাতা পুরসভায়। সেই ঘটনা জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেছে পুর প্রশাসন। শনিবার কলকাতা পুরসভায় আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার স্থায়ী কর্মীদের যাবতীয় তথ্য রয়েছে পুর কর্তৃপক্ষের হাতে। তবে বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত অস্থায়ী কর্মী সম্পর্কিত কোনও তথ্যভান্ডার নেই। অথচ প্রতি মাসে বিপুল টাকা ব্যয় হয় এই অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে। সেই অস্থায়ী কর্মীদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও তাঁদের পরিচয়পত্র দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মেয়র। আর সেই কাজে নেমেই বেরিয়ে এসেছে এক কর্মীর দুই বিভাগে চাকরি ও বেতন তোলার একাধিক ঘটনা। তদন্ত চালিয়ে আপাতত তেমনই ৬০ জন অস্থায়ী কর্মীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, সিদ্ধান্ত হয়েছে, নির্দিষ্ট দিন প্রতি বার কর্মীদের চুক্তি পুনর্নবীকরণ হবে। কোন বিভাগে কত অস্থায়ী কর্মী, তাঁরা বর্তমানে কর্মরত কি না, সে বিষয়ে নজর রাখা হবে। দু’জায়গায় থাকা একই কর্মীর নাম বাদ দিতে হবে।

অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নাম রয়েছে পুরসভার জঞ্জাল সাফাই ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের খাতায়। আবার তাঁরই নাম রয়েছে অন্য বিভাগের কর্মী-তালিকাতেও। অস্থায়ী কর্মীর নাম যেমন এক। তেমনই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্যও অভিন্ন। তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কলকাতা পুরসভার মতো এত বড় একটি প্রতিষ্ঠানে কী ভাবে দিনের পর দিন একই নাম ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দু’বার করে বেতন গিয়েছে? এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেছেন, ‘‘১০০ দিনের কর্মীদের বেতন নিয়ে একটা ভুল ধরা পড়েছে। ৬০ জন বিভিন্ন ওয়ার্ডে রয়েছেন, যাঁদের দু জায়গা থেকে মাইনে হয়েছে। আমরা দেখেছি এবং ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

আবার এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘এই বিষয়টি নজরে আসায় প্রত্যেক অস্থায়ী কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, আধার, প্যান— সব তথ্য ও ইউনিক নম্বর অর্থাৎ ক্যাজ়ুয়াল বা কন্ট্র্যাকচুয়াল নম্বর দিয়ে তাঁদের সমস্ত তথ্য দেখে ডেটাবেস তৈরি হচ্ছে। এর ফলে এত দিন যে তালিকা ছিল, তা থেকে প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ কর্মীর নাম কমে যাবে, যাঁরা দুই বিভাগ থেকে বেতন তুলছিলেন।’’ পুরসভার সূত্রে খবর, কর্মী-তালিকার ভিত্তিতে এজেন্সি টাকা তোলে। আদৌ এত কর্মী কাজ করেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ জেগেছিল পুরসভা কর্তৃপক্ষের ও মেয়রের মনে। সেই অনুযায়ী প্রতি অস্থায়ী কর্মীর পরিচয়পত্র ও কন্ট্র্যাকচুয়াল নম্বর দেওয়া শুরু করে পুরসভা। অনেক কর্মী তাঁদের তথ্য দিতে গড়িমসি করতে থাকেন মাসের পর মাস। তাই তাঁদের বেতন আটকানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন পুর আধিকারিকরা। এমন কড়া অবস্থান নেওয়ায় বেশ কিছু অস্থায়ী কর্মী তাঁদের তথ্য জমা দিলে বিষয়টি নজরে আসে আধিকারিকদের। দেখা যায়, একই কর্মীর নাম দুই বিভাগের কর্মী-তালিকায় রয়েছে। দুই বিভাগ থেকে মাসের পর মাস বেতনও পেয়েছেন তাঁরা। বিষয়টি জানাজানির পরেই ঘটনার অন্তর্বর্তী তদন্ত শুরু হয়। আপাতত মেয়রের নির্দেশের ওই কর্মীদের চিহ্নিত করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষপাতী কলকাতা পুরসভার প্রশাসন।

আরও পড়ুন
Advertisement