Madhyamik Examination

মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকলে এ বার দেহ তল্লাশি অভিভাবকদেরও

পর্ষদের এক কর্তা জানাচ্ছেন, অতীতে এমনও কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা রীতিমতো আটঘাট বেঁধে, পরিকল্পনা করে করা হয়েছে।

Advertisement
আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:০২
পরীক্ষার্থীর  অভিভাবক যদি পরী‌ক্ষা কেন্দ্রে ঢোকেন, তা হলে এ বার থেকে সেই অভিভাবকের দেহ তল্লাশি করবে পুলিশ।

পরীক্ষার্থীর অভিভাবক যদি পরী‌ক্ষা কেন্দ্রে ঢোকেন, তা হলে এ বার থেকে সেই অভিভাবকের দেহ তল্লাশি করবে পুলিশ। — প্রতীকী চিত্র।

মাধ্যমিক পরীক্ষায় পুলিশ পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করে না। তবে, বিশেষ প্রয়োজনে কোনও পরীক্ষার্থীর অভিভাবক যদি পরী‌ক্ষা কেন্দ্রে ঢোকেন, তা হলে এ বার থেকে সেই অভিভাবকের দেহ তল্লাশি করবে পুলিশ। মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement

এ দিন রামানুজ বলেন, ‘‘এমনিতে সাধারণ পরীক্ষার্থীর সঙ্গে অভিভাবকের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার নিয়মই নেই। বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে অভিভাবকদের ঢুকতে দেওয়া হয়। তবে, অতীত অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি, বিশেষ প্রয়োজনে অভিভাবকেরা ভিতরে ঢুকে টুকলির কাগজ বা মোবাইল ফোন দিয়ে গিয়েছেন পরীক্ষার্থীকে। কয়েকটি ক্ষেত্রে ধরাও পড়ে গিয়েছেন তাঁরা। সেই কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কোনও অভিভাবক পরীক্ষার হলে প্রবেশ করলে ঢোকার ও বেরোনোর সময়ে পুলিশ তাঁর দেহ তল্লাশি করবে।’’

পর্ষদের এক কর্তা জানাচ্ছেন, অতীতে এমনও কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা রীতিমতো আটঘাট বেঁধে, পরিকল্পনা করে করা হয়েছে। যেমন, গত বছরই দেখা গিয়েছিল, এক পরীক্ষার্থীর শিশুসন্তান কাঁদছে। তাকে তার মা না খাওয়ালে কান্না থামবে না, এই অজুহাতে ওই পরীক্ষার্থীর কাছে শিশুটিকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক মহিলা। যিনি নিজেকে পরীক্ষার্থীর আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। শিশুসন্তান কাঁদছে শুনে মানবিকতার খাতিরে ওই মহিলাকে ভিতরে ঢোকার বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়। পরে জানা যায়, শিশুকে খাওয়ানোর নাম করে ভিতরে গিয়ে ওই পরীক্ষার্থীকে টুকলির কাগজ দিয়ে এসেছিলেন ওই মহিলা। ধরা পড়ার পরে জানা যায়, ওই পরীক্ষার্থীর কোনও সন্তানই নেই। পুরোটাই পরিকল্পনা করে করা হয়েছিল।

রামানুজ জানান, শুধু এই ঘটনাই নয়, নানা ধরনের অজুহাতে অভিভাবকদের ভিতরে ঢোকার ঘটনা ঘটে। যেমন, কোনও পরীক্ষার্থী সঙ্গে জরুরি ওষুধ নিতে ভুলে গিয়েছে, তাকে ওষুধ দিয়ে আসতে হবে— এমন অজুহাতে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকে পরীক্ষার্থীর পরিচিত কেউ তাকে মোবাইল দিয়ে এসেছেন। রামানুজ বলেন, ‘‘১০
লক্ষের মতো পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক দেয়। এত সংখ্যক পরীক্ষার্থীর দেহ তল্লাশি করা পুলিশের পক্ষে খুবই কঠিন। তাই পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি শিক্ষকেরাই করবেন। কিন্তু কোনও বিশেষ দরকারে প্রাপ্তবয়স্ক কেউ পরীক্ষা
কেন্দ্রে ঢুকে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তাঁর দেহ তল্লাশি করবে পুলিশ।’’

এ ছাড়া, পর্ষদ জানিয়েছে, পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ারকে রাখা যাবে না বলে তাঁরা নির্দেশ দিয়েছেন। এই বিষয়ে পুলিশকর্তাদের সঙ্গেও তাঁদের কথা হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সাধারণ পুলিশের সঙ্গে সিভিক
ভলান্টিয়ারেরা থাকলেও পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে তাঁদের রাখা যাবে না। কেন রাখা যাবে না, তার কারণ হিসাবে রামানুজ বলেন, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ারেরা সাধারণত এলাকার বাসিন্দা হন। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রও তাদের বাড়ির আশপাশের এলাকার মধ্যেই হয়। তাই পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের পরিচিত কোনও পরীক্ষার্থী থাকতেই পারে। সেই পরীক্ষার্থী যাতে কোনও রকম বাড়তি সুবিধা বা টুকলির সুযোগ না পায়, তা নিশ্চিত করতেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে রাখা যাবে না।’’

Advertisement
আরও পড়ুন