সোমবার সিজিও কমপ্লেক্সে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। ছবি: সারমিন বেগম।
সোমবার সকালে আচমকা সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, আরজি করের চিকিৎসক-পড়ুয়াদের কাছ থেকে পাওয়া বেশ কিছু নথি তাঁর কাছে ছিল। সে সব সিবিআইকে দিতে চান তিনি। সেই কারণেই সিবিআই দফতরে পৌঁছেছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু খোলসা করেননি কুণাল। তবে সিবিআই দফতরে অন্য একটি কাজও তাঁর ছিল বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা।
সিজিওতে পৌঁছে কুণাল বলেন, ‘‘অন্য একটি মামলায় আমার এখানে আসা। কিন্তু তার পাশাপাশি, আরজি করের কিছু জুনিয়র চিকিৎসক এবং প্রাক্তনী কয়েক দিন আগে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিছু বিষয়ে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলেন। আমি তাঁদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমার কাছে কেন এলেন? তাঁরা জানিয়েছিলেন, চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের সময়ে আমি তাঁদের সময় দিয়েছিলাম। তাই এ ক্ষেত্রেও আমার কাছে এসেছেন।’’
কুণাল আরও বলেন, ‘‘আরজি কর হাসপাতালের উপর আমার দুর্বলতা রয়েছে। আমার বাবা এবং মা, উভয়ের সেখানকার পড়ুয়া ছিলেন। আমার জন্ম আরজি করে। জুনিয়র চিকিৎসকেরা জরুরি কিছু বিষয়ে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মেডিক্যাল ভাষা সবটা আমি বুঝিনি। আমি বলেছিলাম, আর একটু পরিষ্কার করতে। তার মাঝেই এই দুর্ভাগ্যজনক হত্যাকাণ্ড আরজি করে ঘটে যায়। দোষীদের বা দোষীর ফাঁসি চাই আমি। আমার কাছে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা জানান, এই নথির কিছু প্রেক্ষিত থাকলেও থাকতে পারে। কী বিষয়ে এই নথি, তা বলতে চাই না। আমি কারও নাম করতে চাই না। এই নথি আমি সিবিআইকে নিতে অনুরোধ করব। নিলে নেবে। না নিলে না নেবে। সিবিআই যদি মনে করে, এই তথ্য তাদের কাজে লাগবে, তবে তারা সেই জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।’’
কলকাতা পুলিশের সঙ্গে নথি নিয়ে কেন যোগাযোগ করেননি? উত্তরে কুণাল বলেন, ‘‘আমার মনে হয়েছে, এতে যথেষ্ট তথ্য রয়েছে। তা সত্য না মিথ্যা, আমি যাচাই করিনি। বিষয়টি যে হেতু এখন কলকাতা পুলিশের হাতে নেই, তাই আমি তাদের হাতে এই তথ্য তুলে দিইনি। সিবিআই তদন্ত করছে। তাই তাদের হাতে দিতে এসেছি। কলকাতা পুলিশ তদন্ত করাকালীন আমার কাছে এই সংক্রান্ত লিখিত তথ্য ছিল না।’’
উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় প্রথম থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তি চেয়েছেন কুণাল। তবে দলের কিছু ভুল সংশোধন প্রয়োজন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি কর-কাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সোমবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই নিয়ে পর পর চার দিন সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছেন সন্দীপ। তার মাঝেই সিবিআই দফতরে গেলেন কুণাল।