আলিপুর চিড়িয়াখানা। ফাইল ছবি।
রাত পোহালেই কলকাতায় পুরভোট। শহরের নিরাপত্তা জোরদার করতে তাই শনিবার থেকে সব রকমের জমায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। সেই পর্যায়ে আলিপুর চিড়িয়াখানা-সহ কলকাতা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চলা শীতকালীন মেলাগুলি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতেই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে তা বন্ধ রাখার আবেদন করা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশীষকুমার সামন্ত বলেছেন, "শুধুমাত্র আগামিকালের জন্য চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একেবারে শেষ মুহূর্তে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।" করোনা সংক্রমণের কারণে প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ ছিল আলিপুর চিড়িয়াখানা। সম্প্রতি চিড়িয়াখানার দরজা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়ায় আবারও ভিড় জমাতে শুরু করেছেন পর্যটকরা। শীতের মরসুমে সেই ভিড় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু, পৌষের প্রথম রবিবার পুরভোটের কারণে রবিবার বন্ধ রাখা হচ্ছে চিড়িয়াখানা।
একই ভাবে শহর কলকাতার প্রাচীনতম চণ্ডী মেলা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার বড়িশা অঞ্চলে আয়োজিত এই মেলার বয়স ২২৯ বছর। চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে এই মেলার সূচনা হয়েছিল। আগামী ২০ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তি ঘটবে ২০০ বছরের পুরনো মেলার। কিন্তু শুক্রবার মেলা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ১৮-১৯ ডিসেম্বর, দু'দিন বন্ধ রাখত হবে মেলা। চণ্ডী মেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শুভেন্দুকুমার বসু বলেন, "প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা প্রতি বছর মেলা করি। তাই যখন কলকাতার পুরভোটের জন্য আমাদের মেলা বন্ধ রাখার কথা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তখন আর আমরা আপত্তি করিনি।"
প্রসঙ্গত, আশপাশের এলাকা থেকে যাতে ‘বহিরাগত’দের প্রবেশ কলকাতায় না হতে পারে, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। কারণ, বড়িশা জনপদের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই মহেশতলা ও বিষ্ণুপুর বিধানসভা। তাই মেলায় আসার নাম করে যাতে ‘বহিরাগত’রা এলাকায় প্রবেশ করে ঘাঁটি করতে না পারে, সেই জন্য আগেভাগে দু'দিন মেলা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ দুশো বছরের প্রাচীন এই মেলা দেখতে এবং মা চণ্ডীর দর্শন পেতে আসেন দূর এলাকার মানুষজন। কিন্তু, পুরভোটের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলকাতার প্রশাসনের এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।