কলকাতা মেট্রো। —ফাইল চিত্র।
বুধবার রাতে শহরে মেয়েদের ‘রাত দখল’ কর্মসূচির জন্য বাড়তি মেট্রো চালানো হবে, জানালেন কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। তবে শেষ মেট্রোর সময়ে পরিবর্তন হচ্ছে না। ১০টা ৪০ মিনিটেই শেষ মেট্রো চলবে। উল্লেখ্য, মেট্রো কেন্দ্রের রেল মন্ত্রকের অধীন। আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার রাতে মেয়েদের যে কর্মসূচি ঘোষিত হয়েছে, বাড়তি মেট্রো দিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তার পাশে থাকার বার্তাই দিল, মনে করছেন অনেকে।
কৌশিক একটি ভিডিয়োবার্তা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘গত দু’তিন দিন ধরে আমাদের কাছে বিভিন্ন সংস্থার তরফে বা ব্যক্তিগত পরিসরে অনুরোধ এসেছে, ১৪ তারিখ রাতে একটি বিশেষ জমায়েতের জন্য মেট্রো পরিষেবা চালু রাখতে। অনুরোধ বিবেচনা করে বুধবারের জন্য আমাদের পরিষেবায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। দমদম এবং কবি সুভাষ থেকে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে শেষ মেট্রো ছাড়ে। সেই পরিষেবায় কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। তার আগে দু’টি বাড়তি মেট্রো চালানো হচ্ছে। রাত ১০টায় দমদম এবং কবি সুভাষ থেকে একটি করে বাড়তি মেট্রো চালানো হবে। আবার ১০টা ২০ মিনিটে বাড়তি আর একটি ট্রেন চলবে। দু’টি মেট্রোই সব স্টেশনে থামবে। এর পর রাতের শেষ মেট্রো ১০টা ৪০ মিনিটে থাকবে। বুধবার রাত পর্যন্ত মেট্রোর সমস্ত বুকিং কাউন্টার খোলা থাকবে। নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যাও আমরা বৃদ্ধি করেছি।’’
#Additional #Metro services to be run tonight on #BlueLine. pic.twitter.com/in6OPtC0OK
— Metro Railway Kolkata (@metrorailwaykol) August 14, 2024
রাত পোহালেই স্বাধীনতা দিবস। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে নারী স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করতে তাই বুধবার রাতটিকেই প্রতিবাদের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকি, রাজ্যের নানা এলাকাতে বুধবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে মেয়েদের জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই জমায়েতে রাজনীতির রং ব্যতিরেকে পা মেলাতে চলেছে নারীসমাজ। রাতেও শহর যাতে নারীদের জন্য সুরক্ষিত থাকে, জমায়েত থেকে সেই বার্তা দেওয়া হবে। এই কর্মসূচি সমাজমাধ্যমে ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই দাবি উঠেছিল, বুধবার রাতে বাড়তি মেট্রো পরিষেবা চালু রাখার। যাতে মেয়েরা জমায়েত শেষে সুষ্ঠু ভাবে বাড়ি ফিরতে পারেন। যদিও যে সময়ে দু’টি বাড়তি মেট্রো চালানোর কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে রাতে ফেরার বিষয়টির খুব একটা সুরাহা হচ্ছে না। কারণ জমায়েত হবে মধ্যরাতে। বাড়তি মেট্রোয় সেই জমায়েতস্থলে পৌঁছনোর সুবিধা হলেও ফেরার সময়ে পরিষেবা পাওয়া যাবে না।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজেপি-সহ সব বিরোধী দল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু আরজি কর-সহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের যে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে, তাতে রাজনীতিকে প্রথম থেকেই প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। যে হেতু মেট্রো রেলের পরিচালনা তথা রেল মন্ত্রক কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অধীনে রয়েছে, বুধবার রাতে বাড়তি পরিষেবার কথা জানিয়ে পরোক্ষে বিজেপি এই আন্দোলনের পাশে থাকার বার্তা দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।