Fire Incidents in Kolkata

আগুন নেভানোর ব্যবস্থা কাজই করেনি শহরের চার অগ্নিকাণ্ডে

গত মঙ্গলবার ধাপার মাঠপুকুরের কাছে একটি মোবিল কারখানায় আগুন লাগে। ওই কারখানাটি অনুমতি ছাড়াই চলছিল বলে জানা গিয়েছে। সেখানেও কোনও অগ্নি-নিরোধক ব্যবস্থা ছিল না।

Advertisement
মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪ ০৫:২৭
অ্যাক্রোপলিস মলে কাচ ভেঙে আগুন নেভানোর কাজ করতে হয়েছিল দমকলকর্মীদের।

অ্যাক্রোপলিস মলে কাচ ভেঙে আগুন নেভানোর কাজ করতে হয়েছিল দমকলকর্মীদের। —ফাইল চিত্র।

মাত্র ২০ দিনের ব্যবধান। তার মধ্যেই শহরের চার জায়গায় বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আর প্রতিটি ঘটনাতেই ঘটনাস্থলে যথাযথ অগ্নি-নিরোধক ব্যবস্থা ছিল না বলে জানাচ্ছে দমকল। ক্যামাক স্ট্রিটের বন্ধ রেস্তরাঁ, কসবার অ্যাক্রোপলিস মল, বড়বাজারের মেহতা বিল্ডিং এবং ধাপায় মোবিলের গুদাম— প্রতিটি আগুনের ঘটনায় দমকলের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

Advertisement

দমকল সূত্রের খবর, গত মাসের মাঝামাঝি কসবার অ্যাক্রোপলিস মলের ফুড কোর্টে বিধ্বংসী আগুন লেগেছিল। তার পরের দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে আধিকারিকদের সন্দেহ হয় যে, অগ্নিকাণ্ডের সময়ে সম্ভবত সেখানকার ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার, স্মোক ডিটেক্টর এবং হিট ডিটেক্টর বন্ধ ছিল। পরে শপিং মলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে সেই সন্দেহ সত্যি বলে প্রমাণিত হয়। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ‘‘কসবার শপিং মলে আগুন লাগার ঘটনায় কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে।’’ প্রসঙ্গত, ওই শপিং মলে আগুন লাগার দিন সকাল থেকে চারতলা ও পাঁচতলার মাঝখানে একটি জায়গায় ঝালাই যন্ত্র ব্যবহার করে একটি বইয়ের দোকানের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কাজ চলছিল। সেই কাজের জন্যই সেখানকার স্প্রিঙ্কলার, স্মোক ডিটেক্টর বা হিট ডিটেক্টর কাজ করেনি বলে দাবি। দমকল সূত্রের খবর, ওই শপিং মলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে কসবা থানায় দমকলের তরফে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ওই শপিং মলে দমকলের নিয়ম মানা হয়নি। সেখানে অগ্নি-নিরোধক কোনও ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না। এর পরেই মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে কসবা থানার পুলিশ।

ওই ঘটনার পরে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ক্যামাক স্ট্রিটে একটি রেস্তরাঁর দোতলায়। সেই ঘটনাতেও দমকল পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছিল যে, আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থাই সেখানে ছিল না। শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ওই রেস্তরাঁর মালিকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে অভিযুক্ত মালিক ফেরার। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এর পরে আগুন লেগেছিল বড়বাজারে মেহতা বিল্ডিংয়ের দোতলায়। দমকল জানিয়েছে, সেখানে আগুন নেভানোর জন্য ভবনের নিজস্ব জলাধার, পাম্প, স্প্রিঙ্কলার থাকলেও তার কোনওটাই কাজ করেনি। যদিও দমকল জানিয়েছে, মেহতা বিল্ডিংয়ে আগুন নেভানোর জন্য ছাদে জলের ট্যাঙ্ক ছিল। এ ক্ষেত্রেও দমকলের বড়বাজার থানা মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

গত মঙ্গলবার ধাপার মাঠপুকুরের কাছে একটি মোবিল কারখানায় আগুন লাগে। ওই কারখানাটি অনুমতি ছাড়াই চলছিল বলে জানা গিয়েছে। সেখানেও কোনও অগ্নি-নিরোধক ব্যবস্থা ছিল না। সুজিত বলেন, ‘‘প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাতেই কোনও অগ্নি-নিরোধক ব্যবস্থা ছিল না। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement