Kolkata Police

সরোবর রক্ষায় পুলিশি কড়াকড়ি অন্য ক্ষেত্রে দেখা যায় না কেন, প্রশ্ন প্রাতর্ভ্রমণকারীদের 

রবীন্দ্র সরোবর এবং সুভাষ সরোবরে এ বছরও ছটের পুণ্যার্থীদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল আদালত। সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে কোমর বেঁধে নেমেছিল পুলিশ।

Advertisement
চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ ০৪:৩৪
An image of Kolkata Police

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সরোবর তো নয়, যেন দুর্গ! আর সেই দুর্গ রক্ষার পরীক্ষায় টানা প্রায় দেড় দিন ধরে কড়া নজরদারি চালাল পুলিশ। যার ফল, ছটের পুণ্যার্থীদের জলাশয়ে নামা তো দূর, সরোবরের ধারেকাছেও ঘেঁষতে দেখা গেল না। সব দেখে সচেতন নাগরিকদের বড় অংশের প্রশ্ন, তা হলে চাইলে পুলিশ পারে! কিন্তু তারাই অন্য ক্ষেত্রে জড়োসড়ো হয়ে থাকে কেন? রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতর্ভ্রমণে যাওয়া এক ব্যক্তির কটাক্ষ, ‘‘সরোবরের চেনা পিচে দারুণ খেললেও অন্যত্র যে তেমন রান করা গেল না, সেটা নিয়ে এ বার বোধহয় পুলিশের ভাবার সময় এসেছে।’’

Advertisement

রবীন্দ্র সরোবর এবং সুভাষ সরোবরে এ বছরও ছটের পুণ্যার্থীদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল আদালত। সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে কোমর বেঁধে নেমেছিল পুলিশ। এক দিন আগে থেকেই দুই সরোবরের প্রতিটি প্রবেশপথ বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়ার পাশাপাশি কেউ যাতে কোনও ভাবেই ঢুকতে না পারেন, তার উপরে নজর রাখতে ৫০০ পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়। যার নেতৃত্বে ছিলেন উপ-নগরপাল এবং সহকারী নগরপাল পদমর্যাদার আধিকারিকেরা। দুই সরোবরের সেই নিরাপত্তা বহাল থাকল সোমবার দুপুর পর্যন্ত।

এ দিন ভোরে রবীন্দ্র সরোবরে দেখা যায়, সেখানে প্রবেশের সব ক’টি গেট আটকে দাঁড়িয়ে পুলিশকর্মীরা। ভিতরেও নানা জায়গায় পুলিশি প্রহরা। প্রাতর্ভ্রমণকারীরা সরোবরে ঢুকতে চাইলে গেটে থাকা পুলিশকর্মীরা তাঁদের সচিত্র পরিচয়পত্র দেখতে চাইছেন। সরোবরের সামনে শরৎ চ্যাটার্জি অ্যাভিনিউ ধরে মাঝেমধ্যে টহল দিচ্ছে পুলিশের গাড়ি। এক প্রাতর্ভ্রমণকারী অমিতাভ চৌধুরী বললেন, ‘‘সরোবর বাঁচানোর ক্ষেত্রে পুলিশি সক্রিয়তা থাকলেও অন্য ক্ষেত্রে তো এই তৎপরতা দেখি না। তা হলে কি এত কিছু সব আদালতের ভয়ে?’’ প্রায় একই প্রশ্ন আর এক প্রাতর্ভ্রমণকারীরও। তাঁর কথায়, ‘‘দু’দিন রাস্তায় হাঁটতে হচ্ছে ঠিকই। তাতে একটু অসুবিধা হলেও আপত্তি নেই। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তো এমন হয় না।’’ সরোবরের ১২ নম্বর গেটের সামনেও একই ছবি। পুলিশকর্মীরা জানালেন, রবিবার রাত ২টো থেকে ডিউটি শুরু হয়েছে তাঁদের।

চিত্রটা আলাদা নয় সুভাষ সরোবরেও। ভোরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচটি গেটের সব ক’টিতে ব্যাপক পুলিশি পাহারা। বেলেঘাটা থানার দিক থেকে সরোবরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রায় দু’কিলোমিটার আগে থেকে। আইডি হাসপাতালের দিক থেকে সরোবরের দিকে যাওয়ার রাস্তাতেও মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। ভাল করে জিজ্ঞাসাবাদ করে তবেই ছাড়া হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের গাড়িও। কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মীর মন্তব্য, ‘‘রাত ২টো থেকে ডিউটি শুরু করেছি। সারা দিনই প্রায় বসে থাকতে হবে। কিন্তু এখন সরোবরে তেমন কেউ আসেন না। সকলেই জানেন আদালতের নির্দেশ।’’

তবে, দুই সরোবরকে রক্ষা করা গেলেও একটা প্রশ্ন কাঁটার মতো বিঁধে থাকলই। তা হল, শব্দ এবং বাজির দাপট আটকানো গেল না কেন? এই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি লালবাজারের কোনও কর্তার থেকেই। এক পুলিশকর্তা শুধু বললেন, ‘‘যেখানে যেমন ব্যবস্থা নেওয়ার, তেমনই নেওয়া হয়েছে। লাঠি উঁচিয়ে তো সব সময়ে আইন শেখানো যায় না।’’

আরও পড়ুন
Advertisement