বাঘাযতীনের হেলে পড়া সেই ফ্ল্যাটবাড়ি। —ফাইল ছবি।
বাঘাযতীনে হেলে পড়া বাড়ির বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে নেতাজিনগর থানায় এফআইআর হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলেই প্রশাসন সূত্রে খবর। বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখতে চাইছে কলকাতা পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশ, এমনটাই সূত্রের খবর। তাই প্রশাসনের আপাতত লক্ষ্য ওই গৃহহীনদের আশ্রয়ের বন্দোবস্ত করে দেওয়া। শুক্রবার কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পরে বাঘাযতীনের হেলে পড়া বাড়িটি যে পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হবে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি। তবে ওই জমিতেই বাসিন্দাদের থাকার বন্দোবস্ত করার প্রয়াস নিয়েছে কলকাতা পুরসভা।
আইনগত ভাবে প্রোমোটার সুভাষ রায়ের পাশাপাশি বাড়ির বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছে কলকাতা পুরসভা। তবে এ ক্ষেত্রে যে পুরসভা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিবেচনা করবে, সে বিষয়ে শুক্রবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মেয়র। তিনি বলেছেন, ‘‘বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে ঠিকই। যে হেতু ওই জমিটির যৌথ মালিক তাঁরাও, তাই বিষয়টি পুলিশ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখবে বলে আমরা আশা করছি।’’ মেয়র আরও বলেন, ‘‘আপাতত জায়গাটি পরিষ্কার করে বাসিন্দাদের থাকার বন্দোবস্ত করা হবে। পরবর্তী কালে আইনি বিষয়টি বিবেচনা করে ওখানে আবার বিল্ডিং তৈরি করা যায় কি না সে বিষয়টি দেখা হবে।’’ মেয়রের এমন মন্তব্যের পরেই পুর প্রশাসনের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে প্রশাসন আপাতত ওই বাড়ির বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করবে না। তবে ওই বাড়িটির নির্মাণ থেকে শুরু করে সংরক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ে যে সব ত্রুটিবিচ্যুতি ধরা পড়েছে, সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতে চাই পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের অনুমোদন।
বাঘাযতীনের ওই বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ জোরকদমে চলছে বলেই পুরসভা সূত্রে খবর। মেয়রের নির্দেশের পর ওই বিল্ডিংটি সম্পূর্ণ ভাবে ভাঙা হলে সেখানে দ্রুত আবর্জনা সরিয়ে ফেলতে চায় পুরসভা। তার পর সেখানে অস্থায়ী বাড়ি বানিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার পক্ষপাতী তারা। প্রসঙ্গত, বকখালি থেকে গ্রেফতার হওয়ার পর প্রোমোটার সুভাষকে আদালতে তোলা হলে তাঁকে তিন দিনের পুলিশের হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রোমোটারের গ্রেফতারির পর বাসিন্দারা আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছিলেন যে, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশে দায়ের হওয়া এফআইআরের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। কিন্তু মেয়রের আশ্বাসের পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন তারাও।