Durga Puja 2024

পুলিশি আশ্বাসে ভরসা থাকলেও ‘জল মেপে’ পদক্ষেপ, পুজোয় নিজস্ব নিরাপত্তা একাধিক কমিটির

কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই মণ্ডপ ধরে ধরে নিরাপত্তার পৃথক ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছে। বৈঠকে কয়েক জন আশঙ্কার কথা শোনাতেই লালবাজারের কর্তারা জানান নিরাপত্তা আঁটসাঁটো করার পরিকল্পনার কথা।

Advertisement
চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৩১

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর জি কর-কাণ্ডের জেরে প্রতিবাদের আবহে পুজোর সময়ে মণ্ডপ চত্বরে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না একাধিক মহল। বুধবার পুলিশের সঙ্গে পুজো কমিটিগুলির বৈঠকে এমন আশঙ্কার সুর শোনা গিয়েছিল। একাধিক পুজো কমিটি আর জি করের প্রসঙ্গ টেনে মণ্ডপ চত্বরে ঝামেলা হতে পারে বলে পুলিশকে জানিয়েছিল। পুলিশের তরফেও নিরাপত্তার বন্দোবস্ত রাখা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশি আশ্বাসে ভরসা থাকলেও ‘জল মেপে’ চলতে চাইছে একাধিক পুজো কমিটি।

Advertisement

কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই মণ্ডপ ধরে ধরে নিরাপত্তার পৃথক ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছে। বৈঠকে উদ্যোক্তাদের কয়েক জন আশঙ্কার কথা শোনাতেই লালবাজারের কর্তারা জানান নিরাপত্তা আঁটসাঁটো করার পরিকল্পনার কথা। তবে তাতেও আশঙ্কা পুরোপুরি যাচ্ছে না উদ্যোক্তাদের। তাই নিজস্ব ব্যবস্থাও রাখছেন তাঁরা। পুজো কমিটিগুলির উদ্যোগে মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক ও বেসরকারি সংস্থার রক্ষী রাখা হলেও এ বার প্রয়োজনে সেই সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভেবে রেখেছে তারা। পুজোর উদ্বোধনের পরে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, সে দিকেই এখন নজর সকলের। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানাচ্ছে তারা।

বুধবার পুলিশের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের বৈঠকে নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কার কথা শুনিয়েছিলেন দক্ষিণের সুরুচি সঙ্ঘের কর্তারা। পুলিশি নিরাপত্তায় ভরসা রাখলেও নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকেরাও মণ্ডপ চত্বরে থাকবেন বলে জানান তাঁরা। অন্যতম উদ্যোক্তা কিংশুক মৈত্র বলেন, ‘‘প্রতি বছরই প্রচুর স্বেচ্ছাসেবক রাখি। এ বছরও তা-ই করছি। মণ্ডপের ভিতরে ও বাইরে প্রায় ৭০০ জন স্বেচ্ছাসেবক, কমিটির সদস্য থাকবেন। এ বছরের পরিস্থিতি যে আলাদা, তা প্রত্যেক সদস্যকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’’ অন্য বছরের মতো এ বারও প্রায় ৫০ জন বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী রাখবে দেশপ্রিয় পার্ক। তবে গত বারের তুলনায় এই সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ওই সংস্থাকে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। এই পুজোর কর্তা সুদীপ্ত কুমারের কথায়, ‘‘উদ্বোধনের এক দিন আগে থেকে পুলিশের পাশাপাশি নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা থাকেন। এ বছরও থাকবেন। পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত হবে। সেই মতো সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি।’’ নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে চেতলা অগ্রণীরও। ক্লাবের সদস্য এবং বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী মিলিয়ে প্রায় ১৫০ জন থাকবেন মণ্ডপের ভিতরেই। বাইরেও নিরাপত্তার বন্দোবস্ত থাকবে। পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে তাঁরা কাজ করবেন। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সমীর ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশ ও দর্শনার্থীদের উপরে ভরসা আছে। আশা করি, নির্বিঘ্নে পুজো শেষ করতে পারব।’’

তবে নিরাপত্তার বহর বাড়ছে উত্তরের হাতিবাগান সর্বজনীনে। পুলিশের পাশাপাশি মণ্ডপের ভিতরে ও বাইরে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। যদিও দাবি, ঝামেলার আশঙ্কায় নয়, বরং পুজোর বাজেট বেশি থাকায় মণ্ডপ-দর্শনে বেশি ভিড়ের সম্ভাবনাতেই এই ব্যবস্থা। এই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা তথা ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের অন্যতম কর্তা শাশ্বত বসু বলেন, ‘‘আন্দোলন বা প্রতিবাদের প্রভাব পুজোর উপরে পড়বে বলে আমরা মনে করি না। তাই ওই ভাবে ভাবছি না। তবে এ বছর যে হেতু আমাদের পুজো ঘিরে অন্য রকম ভাবনাচিন্তা রেখেছি, তাই ভিড় বেশি হবে ধরে নিয়েই নিরাপত্তার আয়োজন করছি আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement