Junior Doctors' Movement

অনশনের পঞ্চম দিনে বুধ রাতে স্বাস্থ্য ভবনে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে ডাকল সরকার, থাকবেন মুখ‍্যসচিব

স্বাস্থ্য ভবনে সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে রাজ্যের টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে হবে বৈঠক। জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে জানানো হয়েছে, মুখ্যসচিবের ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁরা বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৪৮
(বাঁ দিকে) ধর্মতলায় অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ধর্মতলায় অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

জুনিয়র ডাক্তারদের ইমেল করে বুধবার বৈঠকে ডাকলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সল্টলেকের স্বাস্থ্য ভবনে সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে রাজ্যের টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে হবে বৈঠক। নেতৃত্ব দেবেন মুখ্যসচিব। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের ৮ থেকে ১০ জনের প্রতিনিধি দল যেতে পারবেন বলে ইমেলে জানিয়েছেন মনোজ। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে জানানো হয়েছে, মুখ্যসচিবের ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁরা বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন। তবে কত জন যাবেন, তা প্যান জিবি বৈঠক করে স্থির করা হবে।

Advertisement

গত শনিবার রাত থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার রাতে অনশনে বসেছিলেন ছয় জন জুনিয়র ডাক্তার। রবিবার সেই অনশনে যোগ দেন আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো, যেই হাসপাতালকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল এই আন্দোলন। আরজি কর হাসপাতালে নির্যাতিতার জন্য বিচার এবং সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা-সহ ১০ দফা দাবি রয়েছে তাঁদের। অনশনের পাঁচ দিনের মাথায় আন্দোলনকারীদের বৈঠকে ডেকে পাঠালেন মুখ্যসচিব। এই প্রসঙ্গে জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘গণ আন্দোলনের চাপ সরকারের উপর পড়ছে। সাধারণ মানুষ এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। সহযোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দুর্বল হয়ে পড়ছি বলে যাচ্ছি না। আমরা আমাদের দাবি আদায় করতে স্বাস্থ্য ভবনে যাচ্ছি। সব দাবি ১০ থেকে ১৫ দিন আগে জানানো হয়েছে। তার পরেও কেন ডাকছেন, বুঝতে পারছি না।’’

আন্দোলনকারীদের ১০ দফা দাবি মধ্যে অন্যতম ছিল রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণ। এই দাবিও আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন দেবাশিস। তাঁর কথায়, ‘‘নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণের দাবি ছিল আমাদের। মুখ্যসচিব সেটা পারবেন কি না আমাদের জানা নেই। তবে আমাদের মানসিক জোর অটুট রয়েছে।’’ মনে করা হচ্ছে, দাবি মানা না হলে যে অনশন তোলা হবে না, সেই ইঙ্গিতই দিয়ে রাখলেন আন্দোলনকারীরা। অনশনকারী অর্ণব মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্যে তা আরও স্পষ্ট ভাবে প্রকাশিত হয়েছে। সহআন্দোলনকারীদের বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা দুর্বল হয়ে পড়ছি ভেবে আপনারা দুর্বল বা নমনীয় হবেন না। সব কটা দাবি আদায়ের জন্য লড়াই করবেন।’’

জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে মঙ্গলবারই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল, এই আন্দোলনকে আরও তীব্রতর করবেন তাঁরা। তাঁরা এ-ও দাবি জানান, তাঁদের সমর্থন করে যে সিনিয়র চিকিৎসকেরা ‘গণইস্তফা’ দিচ্ছেন, তাঁদের উপর প্রশাসনকি চাপ তৈরি করা হচ্ছে। দেবাশিসের কথায়, ‘‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। যদি সত্যি তেমন কিছু হয়, তবে আমাদের আন্দোলন তীব্রতর হবে।’’ প্রসঙ্গত, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পর বুধবার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র ডাক্তারেরাও ‘গণইস্তফা’ দিয়েছেন। ন্যাশনাল মেডিক্যাল থেকে ৩৪ জন সিনিয়র ডাক্তার বুধবার ‘গণইস্তফা পত্রে’ স্বাক্ষর করেছেন। একই পথে হাঁটতে চলেছে শহরের আরও কয়েকটি হাসপাতাল। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের তরফে সরকারকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ না করলে সেখানকার সিনিয়র ডাক্তারেরাও ‘গণইস্তফা’ দেবেন বলে জানিয়েছেন। একই ডাক দিয়েছেন সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারেরাও। জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলিতেও এই আঁচ পৌঁছে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ‘গণইস্তফা’ দিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা। প্রস্তুতি চলছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজেও। এই আবহে বুধবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে ডাক দিলেন মুখ্যসচিব।

আরও পড়ুন
Advertisement