—প্রতীকী ছবি।
এমপি বিড়লা গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষবর্ধন লোঢাই। তিনিই চেয়ারম্যান হিসাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। বৃহস্পতিবার রায়ে এ কথা জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, প্রিয়ম্বদা দেবীর বিড়লা গ্ৰুপের সম্পত্তির ভার থাকবে হর্ষবর্ধনের হাতেই। গত তিন বছর আগে হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ওই সংস্থার চেয়ারম্যান পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দিয়েছিল। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে। এত দিন সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে সিদ্ধান্ত নিত তিন সদস্যের প্রশাসনিক কমিটি। বৃহস্পতিবার কমিটির কাজের উপরেও সীমা টেনে দিয়েছে উচ্চ আদালত।
লোঢা বনাম বিড়লার পারিবারিক সম্পত্তির টানাপড়েন এই মামলা। গত প্রায় ২১ বছর ধরে নানা সমস্যা নিয়ে ওই দুই পরিবারের মামলার লড়াই চলছে। নতুন সমস্যা নিয়ে এই মামলাটি গত তিন বছর ধরে হাই কোর্টে চলছিল। লোঢাদের বক্তব্য, এমপি বিড়লা গ্ৰুপের প্রধান প্রিয়ম্বদা বিড়লা মৃত্যুর আগে কোম্পানির যাবতীয় সম্পত্তি স্বামী মাধবপ্রসাদের বিশ্বস্ত উপদেষ্টা রাজেন্দ্র সিংহ লোঢার নামে উইল করে যান। ফলে সংস্থার পরবর্তী চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র। ২০০৪ সালের ৩ জুলাই প্রিয়ম্বদার মৃত্যুর পরে ওই উইল মানতে চাননি এমপি বিড়লা পরিবারের উত্তরাধিকারীদের একাংশ। আর উত্তরাধিকার সূত্রে বাবা রাজেন্দ্রর মৃত্যুর পরে ওই সংস্থার চেয়ারম্যান হন হর্ষবর্ধন। পরে প্রিয়ম্বদার উইলকে চ্যালেঞ্জ করে দু’পক্ষের মধ্যে আইনি লড়াই শুরু হয়। পরে আদালতের নির্দেশে সংস্থার দেখাশোনার ভার যায় তিন সদস্যের প্রশাসনিক কমিটির উপর।
২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে সংস্থার চেয়ারম্যান থেকে অপসারিত হন হর্ষবর্ধন। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন রাজেন্দ্র পুত্র। এই অবস্থায় গত কয়েক বছরে ওই কমিটি একাধিক সিদ্ধান্ত। অভিযোগ, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে নিজেদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জোর দেয় তিন সদস্যের ওই কমিটি। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ওই প্রশাসনিক কমিটি একাধিক সিদ্ধান্তের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপায়। দ্ব্যর্থহীন ভাবে দুই বিচারপতি রায় দিয়ে জানান, সংস্থার অভ্যন্তরীণ কোনও বিষয়ে নাক গলাতে পারবে না ওই কমিটি। তারা কেবল সংস্থার আরও উন্নতির চিন্তা করবে।
প্রিয়ম্বদার মৃত্যুর পরে রাজেন্দ্রর মালিকানাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করেছিলেন বিড়লা পরিবারের একাংশ। সেই মামলা দীর্ঘ দিন চলার পরে ২০০৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেয়। ওই সংস্থার চেয়ারম্যান হিসাবে হর্ষবর্ধন দায়িত্ব নেওয়ার পরে মালিকানা নিয়ে আবার নতুন মামলা হয়। বৃহস্পতিবার ওই মামলারই রায় ঘোষণা করে হাই কোর্ট।