CPM

কসবায় সিপিএম পার্টি অফিসে কামড়াকামড়ি, চলল মারপিটও! কারও হাতে সেলাই পড়ল, কারও কপালে ব্যান্ডেজ

কসবার ৯১ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের এরিয়া কমিটিতে এর আগেও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। মাস কয়েক আগে বৈঠকে অশান্তির মধ্যে এক নেতা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। এ বার তাঁর হাতেই পড়ল কামড়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৩১
A fight broke out at the area committee meeting at the CPM party office in Kasba

কসবার ৯১ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের পার্টি অফিসে মারামারি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

রক্তারক্তিতে ‘লাল’ হল সিপিএমের পার্টি অফিস। চলল মারপিট থেকে কামড়াকামড়ি পর্যন্ত। ঘটনাস্থল কসবার ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএমের এরিয়া কমিটির দফতর। শনিবার রাতে চলছিল কমিটির বৈঠক। সেখানেই কথাকাটাকাটি থেকে জল গড়াল হাতাহাতিতে। কারও হাতে সেলাই পড়ল, কারও কপালে ব্যান্ডেজ বাঁধতে হল! বৈঠক ভেস্তে যায় মাঝপথেই।

Advertisement

কসবার সিপিএমের এই এরিয়া কমিটির বৈঠকে এর আগেও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। কয়েক মাস আগে বৈঠকে অশান্তির মধ্যে এক সিপিএম নেতা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। প্রায় ২০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন। সূত্রের খবর, শনিবার রাতে সেই সিপিএম নেতার হাতেই কামড় পড়েছে।

দলের উচ্চতর কমিটির অনেক নেতানেত্রীই এই ঘটনার কথা শুনে ক্ষুব্ধ। লজ্জিতও। অনেকে আবার এতটুকু বিস্মিত নন। সিপিএমের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘এ জিনিস তো নতুন নয়। এই শতাব্দীর গোড়ায় আমাদের হুগলি জেলার সম্মেলন এ ব্যাপারে মাইলফলক হয়ে রয়েছে। জাঙ্গিপাড়ায় সেই জেলা সম্মেলনে এমন গন্ডগোল হয়েছিল, যাতে সম্মেলন মঞ্চেই প্রবীণ নেতা নির্মল মুখোপাধ্যায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সম্মেলন শেষ হওয়ার কয়েক দিন বাদে তাঁর মৃত্যুও হয় হাসপাতালে।’’ তার পর রসিকতা করে বলেন, ‘‘আমরা সঠিক পথে রয়েছি। সরকারে থাকার সময়ে দলাদলি করতাম, এখন পার্টি বিলুপ্ত হওয়ার পথে, এখনও এই কাজ করছি। অর্থাৎ আমাদের পথেই আমরা চলছি।’’

কসবার ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপু দাস। আনন্দবাজার ডট কমের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি তো বৈঠকে ছিলেন, সেখানে কী ঘটনা ঘটেছে? তিনি ফের বলেন, ‘‘আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’ সিপিএম সূত্রে খবর, দীপু দাস-সহ ওই বৈঠকে উপস্থিত জেলা নেতৃত্বকেও স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের কুবচনের মুখোমুখি হতে হয়েছে।

বৈঠকে যখন এমন অশান্তি এবং তুলকালাম হচ্ছে সেই অবস্থাতেই অকুস্থল থেকে সিপিএম নেতৃত্বের একটা অংশ যোগাযোগ করেছিল দলের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদারের সঙ্গে। সূত্রের খবর, কল্লোল বলেছেন, গোটা ঘটনা কী ঘটেছে, তা বিস্তারিত ভাবে লিখিত আকারে জেলা কমিটিকে জানাতে। উত্তর কলকাতার সিপিএমের এক নেতা বিষয়টি নিয়ে নিজের দলের উদ্দেশেই কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় যা চলছে তাতে মনে হচ্ছে পার্টিতে একটা সত্যনারায়ণ পুজো দেওয়া উচিত। যুব সংগঠনের নেতা নির্বাচন নিয়ে একটা বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সেটা এখনও মেটেনি। তার মধ্যেই কসবার এই কামড়াকামড়ির ঘটনা প্রকাশ্যে চলে এল।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘এতে দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকাও অস্বীকার করা যায় না।’’

Advertisement
আরও পড়ুন