KMC Hawker

হকার শংসাপত্র দেওয়া শুরু এপ্রিল মাসেই, তবে কলকাতা পুরসভার হকার নীতির সঙ্গে একমত নয় সংগঠন

কলকাতা পুরসভার তরফে ৮৭২৭ জন হকারকে শংসাপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ল এই বৈঠকেই। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, যে খুব শীঘ্রই হকারদের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। তবে কিছু টেকনিক্যাল কারণে এই মুহূর্তে পাবলিক ডোমেনে হকারদের তথ্য প্রকাশ করতে অসুবিধা হচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ২০:৪৬
KMC will be given the cirtificate to hawkers

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কলকাতা পুরসভার হকার নীতিতে সায় নেই হকার সংগঠনের। বুধবার টাউন ভেন্ডিং কমিটির বৈঠক উত্তপ্ত হল এই ইস্যুতে। যদিও কলকাতা পুরসভার তরফে ৮৭২৭ জন হকারকে শংসাপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ল এই বৈঠকেই। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, যে খুব শীঘ্রই হকারদের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। তবে কিছু টেকনিক্যাল কারণে এই মুহূর্তে পাবলিক ডোমেনে হকারদের তথ্য প্রকাশ করতে অসুবিধা হচ্ছে। ফলে দু-এক দিনের মধ্যে হকার সার্টিফিকেট দেওয়া শুরু হবে। কিন্তু হকার নেতৃত্ব এবং পুরসভার মধ্যে বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে বলেই পুরসভা সূত্রে খবর। টাউন ভেন্ডিং কমিটির বৈঠকে হকারদের উচ্ছেদ নিয়ে কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। হকারদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন টাউন ভেন্ডিং কমিটির সদস্য ও হকার্স জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির সভাপতি অসিত সাহা। তাঁর দাবি, কলকাতায় যে সব ট্র্যাডিশনাল হেরিটেজ মার্কেট রয়েছে যেমন চাঁদনি, ডালহৌসি, পার্ক স্ট্রিট, বড়বাজার ইত্যাদি জায়গায় ফুটপাত নেই বললেই চলে। সেই সব জায়গায় সমীক্ষা, জায়গা চিহ্নিতকরণ, রেজিস্ট্রেশন এবং পুনর্বাসন দিয়ে হকারদের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।

Advertisement

অসিতের আরও দাবি, এখনই ‘ব্ল্যাক টপ’অর্থাৎ রাস্তার উপরে বসা হকারদের উচ্ছেদ করা যাবে না। সবার আগে আইন মেনে চারটি ধাপ সম্পন্ন করে আগে তাঁদের পুনর্বাসন দিতে হবে। এমনটা না হলে, তাঁরা আদালতে যেতে পারেন বলেই বৈঠকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই হকার নেতা। তবে পাল্টা কলকাতা পুরসভার তরফে দাবি করা হয়েছে, হকার আইনে কোথায় কোনও জায়গায় বলা নেই যে রাস্তায় বা ব্ল্যাক টপে বসা যাবে। যদি বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আদালতে যেতে চান যেতেই পারেন। কারণ হকারদের বিষয়টি পুরসভা সহানুভূতির সঙ্গে দেখছে। টাউন ভেন্ডিং কমিটির বৈঠকে ছিলেন মিউনিসিপাল কমিশনার ধবল জৈন, চেয়ারম্যান দেবাশীষ কুমার-সহ বিভিন্ন দফতরের ডিজি-সহ পুর আধিকারিকেরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। শংসাপত্র দিতে এক জানলা নীতির ব্যবহার করতে চান পুরসভার আধিকারিকেরা। যাতে কোনওরকম হয়রানি ছাড়াই হকারেরা এই শংসাপত্র সংগ্রহ করতে পারেন। তবে এই শংসাপত্র পাওয়ার প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে পুরসভার যাবতীয় নিয়ম মেনে সংশ্লিষ্ট হকারকে চলতে হবে। তবেই শংসাপত্রের পাশাপাশি পুরসভা থেকেও সহযোগিতা পাবেন হকাররা।

প্রসঙ্গত, গত বছর লোকসভা নির্বাচনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নের এক বৈঠকে রাস্তায় যেখানে সেখানে হকার বসা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। পরে কলকাতা পুরসভা-সহ হকার সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের নিয়ে নবান্নে এক উচ্চপর্যয়ের বৈঠক করেছিলেন তিনি। তারপরেই সুষ্ঠু হকারনীতি তৈরি করতে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। তার ভিত্তিতেই ‘ভেন্ডিং সার্টিফিকেট’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে কলকাতা পুরসভার লক্ষ্য, অভিযানে নেমে রাস্তা থেকে হকার সরিয়ে তাঁদের ফুটপাতে তুলে দেওয়া।

Advertisement
আরও পড়ুন