Justice Abhijit Gangopadhyay

‘আমার কাজকর্মে একটা শ্রেণি খুব বিপদে পড়ছে’, অভিষেকের মামলা নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

সুপ্রিম কোর্টে অভিষেকের মামলা প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মামলা যে কেউ করতে পারেন, যে কোনও আর্জি জানাতে পারেন, এমনকি বলতে পারেন, চাঁদ আমাকে পেড়ে দাও।”

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:০৪
Justice Abhijit Gangopadhyay\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s comments on a case against him by Abhishek Banerjee in SC

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বিচারপতির মন্তব্য, “বিচারপতিদের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে। সাংবিধানিক রক্ষাকবচ ছাড়া অন্য মামলা হতেই পারে।” যদিও কী বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তা না জেনে প্রাথমিক ভাবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিচারপতি।

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যায় একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানেই ওই মন্তব্য করেন তিনি। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বহু বিখ্যাত মানুষ, যাঁরা কাজ করার চেষ্টা করেছেন, তাঁদেরকে সব সময় টেনে নামানোর চেষ্টা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বহু প্রচার হয়েছে। এমনকি বিধবা বিবাহ প্রচলনের সময় বিদ্যাসাগর মশাই নিজে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন।”

তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রসঙ্গে পরে বিশদে বলার ইচ্ছা আছে বলে জানিয়ে বিচারপতি বলেন, “যে কেউ মামলা করতে পারেন। যে কোনও আর্জি জানাতে পারেন। বলতেই পারেন, চাঁদ আমাকে পেড়ে দাও। যিনি শুনছেন (মামলা), তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।” তার পরই বিচারপতির সংযোজন, “মনে হয় আমার কাজে এবং কথাবার্তায় একটা শ্রেণি খুব বিপদে পড়ছে।” তাঁর মন্তব্যে, তদন্তকারী সংস্থা প্রভাবিত হচ্ছে কি না, তা ওই সংস্থাগুলিই বলতে পারবে বলে জানান বিচারপতি। তাঁর কথায়, “একটা কথায় এজেন্সি প্রভাবিত হচ্ছে, এ সব আষাঢ়ে গল্প।” সময় পাল্টে গিয়েছে বলে দাবি করে বিচারপতির প্রশ্ন, “আগে এত চুরি-জোচ্চুরি দেখেছেন? চাকরি বিক্রি দেখেছেন?”

বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। আবেদনে তিনি জানান, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আদালতের বাইরে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্টের কাছে তৃণমূল সাংসদের আর্জি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করা হোক। এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দেওয়া হোক।

অভিষেক তাঁর আর্জিতে জানান, কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দেওয়া হোক, তিনি যাতে একটি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করেন। সেই বেঞ্চ নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা শুনবে। মূলত বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে যে মামলাগুলি রয়েছে, সেই মামলাগুলি যাতে ওই বিশেষ বেঞ্চে যায়। পাশাপাশি, অভিষেকের দাবি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আদালতের বাইরে বার বার যে এক পক্ষের বয়ান তুলে ধরছেন, তা থেকে তাঁকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হোক।

বস্তুত, কিছু দিন আগেই অভিষেকের সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমের সামনেই বিচারপতি প্রশ্ন করেন, এক জন নেতা হিসাবে অভিষেকের সম্পত্তির উৎস কী? সাংসদ কি তাঁর সম্পত্তির হিসাব দেবেন, তিনি কি তাঁর সম্পত্তির হিসাব সমাজমাধ্যমে পোস্ট করবেন— এমনই কিছু মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা দেখতে চাই, কার কত সম্পত্তি আছে? কে কত সম্পত্তি করেছেন? কার কতটা সম্পত্তির উৎস কী?’’ এর পর বাম নেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের উদাহরণ টানেন বিচারপতি। তাঁর কথায়, ‘‘অভিষেক যদি সমাজমাধ্যমে ওই পোস্ট করেন, তবে তাঁর সমসাময়িক নেতা ধরুন মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বা অন্য নেতাদের কাছেও একই আবেদন রাখব। তাঁরাও সম্পত্তির হলফনামা তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়াতে দিন, আমরা দেখতে চাই।’’

Advertisement
আরও পড়ুন