আবাস প্রকল্পে একটি বাড়ির আয়তন কমপক্ষে ২৫ বর্গ মিটার হতে হয়। —প্রতীকী চিত্র।
এ বছরের মাঝামাঝি আবাস প্রকল্পে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ছাড়ার বার্তা দিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে বাড়ি তৈরির কাজের অগ্রগতির প্রমাণ রাখতে হবে দ্রুত। এই অবস্থায় নির্মাণ সামগ্রীর অভাবে কাজ যাতে না থমকায়, তা নিশ্চিত করার বার্তা জেলার আধিকারিকদের দিচ্ছে সরকারের সর্বোচ্চ মহল। এ কাজে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় লাগবে ইট। দরকারে তাই ভিন রাজ্য থেকে ইট নিয়ে আসায় আপত্তি থাকছে না প্রশাসনের।
এক লপ্তে ১২ লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে রাজ্যে। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, আবাস প্রকল্পে একটি বাড়ির আয়তন কমপক্ষে ২৫ বর্গ মিটার হতে হয়। তাতে রান্নাঘর এবং শৌচালয়ের সুবিধাও থাকা দরকার। সেই হিসেবে তেমন একটি বাড়ি তৈরিতে কমবেশি আট হাজার ইট প্রয়োজন হয়। এই সূত্রে ১২ লক্ষ বাড়ির জন্য রাজ্যে এখন প্রায় ৯৬০ কোটি ইটের চাহিদা রয়েছে। সেই কারণে প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে ইটের জোগান স্বাভাবিক রাখার দায়িত্ব দিয়েছে নবান্ন। ইতিমধ্যে স্থানীয় ব্যবসায়ী বা ইটভাটা মালিকদের সঙ্গে জেলা কর্তারা বৈঠকও সেরে ফেলেছেন। তুঙ্গে থাকা চাহিদার মধ্যে অসাধু পথে ইটের দাম যাতে না বাড়ে, সে ব্যাপারে পৃথক দলও গঠিত হয়েছে জেলা প্রশাসনিক স্তরে।
জেলা আধিকারিকদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, সব জায়গায় ইট তৈরির অগ্রগতি সমান নয়। অনেকগুলি জেলায় পর্যাপ্ত ইট তৈরি হলেও, কিছু জেলায় নদীগর্ভের মাটি তোলায় নিষেধাজ্ঞা থাকায়, সেখানে তত সংখ্যক ইট তৈরি হয় না। সংশ্লিষ্ট মহল আরও জানাচ্ছে, যেখানে উৎপাদন কম, সেখানে পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে ইট যাওয়ায় বাধা নেই। উত্তরবঙ্গের কিছু জেলায় ইতিমধ্যেই অসম-সহ প্রতিবেশী কিছু রাজ্য থেকে ইট আসতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে ইটের জোগানে আকাল দেখা দেবে না। এক কর্তার কথায়, “বাইরের রাজ্য থেকে ইট এলেও আপত্তি নেই। দাম এবং জোগান যাতে স্বাভাবিক থাকে, নিশ্চিত করতে হবে।”
প্রসঙ্গত, আগামী জুনেই আবাসে দ্বিতীয় কিস্তির বরাদ্দ ছাড়ার ব্যাপারে এক রকম মনস্থ করেছে নবান্ন। গত ডিসেম্বর থেকে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। সরকারের অবস্থান, বরাদ্দ পাওয়ার পরে তিন থেকে ছ’মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট মাত্রায় নির্মাণ শেষ করে ফেলতে হবে। তার পরের তিন মাসে পুরো বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতে হবে। ফলে জেলাশাসকেরা ছাড়াও বিডিও-রা সিমেন্ট, বালি, ছোট পাথর (স্টোন চিপস), করোগেটেড টিন, অ্যাসবেস্টস, লোহার জোগান এবং দর স্বাভাবিক থাকার উপর নজর রাখবেন। বলা হয়েছে, প্রশিক্ষিত নির্মাণকর্মীর তালিকাও তৈরি রাখতে হবে জেলায় জেলায়। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, রাজ্যে তেমন প্রশিক্ষিত গ্রামীণ নির্মাণকর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার।