Malda Incident

১৯ বছর সংসার করে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছেন, মালদহে জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করলেন ‘মর্মাহত’ স্বামী

মঙ্গলবার হিন্দু রীতি অনুসারেই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পুরোহিত মন্ত্রপাঠ করেন। পাত পেড়ে খাওয়ার বন্দোবস্ত ছিল গ্রামবাসীদের জন্য। স্বামী বলেন, “স্ত্রী এখন আমার কাছে মৃত।”

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫ ১২:৫৪
শ্রাদ্ধের পর বসিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে গ্রামবাসীদের। মঙ্গলবার মালদহে।

শ্রাদ্ধের পর বসিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে গ্রামবাসীদের। মঙ্গলবার মালদহে। —নিজস্ব চিত্র।

১৯ বছর সংসার করার পর প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি ছেড়েছেন স্ত্রী। এই ঘটনায় মর্মাহত স্বামী জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করলেন। শুধু তা-ই নয়, আত্মীয়স্বজন এবং গ্রামবাসীদের জন্য খাওয়াদাওয়ারও বন্দোবস্ত করা হল। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

Advertisement

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের পরাশটলা গ্রামের বাসিন্দা অচিন্ত্য রায়। ১৯ বছর আগে পার্শ্ববর্তী বরুই গ্রামের বাসিন্দা দ্রৌপদী রায়কে বিয়ে করেছিলেন তিনি। সুখেই সংসার করছিলেন নিঃসন্তান এই দম্পতি। কিন্তু গত ১৮ মার্চ প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে নতুন করে ঘর বেঁধেছেন দ্রৌপদী। এই খবর পেয়েই শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন অচিন্ত্য। তাঁর কষ্ট আরও বাড়িয়ে দেয় স্ত্রীর একটি আচরণ। অচিন্ত্য জানান, প্রেমিকের সঙ্গে ফেসবুক রিল বানিয়ে তা হোয়াট্সঅ্যাপে পাঠান দ্রৌপদী। স্ত্রীকে প্রেমিকের সঙ্গে দেখার পর মাথার ঠিক রাখতে পারেননি অচিন্ত্য। স্ত্রীকে চিরতরে ভুলে যেতে শ্রাদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন।

মঙ্গলবার হিন্দু রীতি অনুসারেই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পুরোহিত মন্ত্রপাঠ করেন। পাত পেড়ে খাওয়ার বন্দোবস্ত ছিল আত্মীয়স্বজন এবং গ্রামবাসীদের জন্য। অচিন্ত্যের কথায়, “স্ত্রী এখন আমার কাছে মৃত। তাই শ্রাদ্ধশান্তির আয়োজন। স্থানীয়দের বক্তব্য, আগামী দিনে যাতে গ্রামে এই ধরনের আর কোনও ঘটনা না ঘটে, তা-ই এই কাজ। পরিবারের সদস্য আশালতা রায় বলেন, “আমাদের বাড়ির বৌ প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে। তাই আমরা তাঁর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলাম। গ্রামে যাতে আর এই ধরনের কোনও ঘটনা না-ঘটে, তারই বার্তা দিয়েছি আমরা।”

স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করে সখেদে অচিন্ত্য বলেন, “পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না। তবে সন্তান না হওয়ায় একটা দুঃখ ছিল। রাজমিস্ত্রির কাজ করে যা উপার্জন করতাম, সমস্তটাই স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে জমা রাখতাম।” একই সঙ্গে অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, “স্ত্রী গভীর রাত থেকে ফোনে কথা বলত। আমি অনেক শাসন করেছিলাম। শ্বশুরবাড়িতে জানিয়েছিলাম। এক দিন কাজ করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখি স্ত্রী বাড়িতে নেই। সমস্ত নতুন কাপড়চোপড়, বিয়ের গয়না আর ৪০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে।”

Advertisement
আরও পড়ুন