দুই জেলা থেকে নবান্ন অভিযানে বিজেপির নেতা-কর্মীরা
Nabanna Abhijan

পুলিশকে এড়াতে পতাকা গুটিয়ে ট্রেনপথে আন্দোলনে

বিজেপির সূত্রের খবর, দলের শ্রীরামপুর এবং হুগলি সাংগঠনিক জেলা থেকে দু’হাজার করে লোক অভিযানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন স্টেশন থেকে বিজেপির লোকেরা হাওড়ামুখী ট্রেন ধরেন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৪ ০৮:০৮
পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ডাকে নবান্ন অভিযানের মিছিল আটকাতে জলকামানের ব্যবহার পুলিশের। মঙ্গলবার, হাওড়া সেতুতে ওঠার মুখে।

পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ডাকে নবান্ন অভিযানের মিছিল আটকাতে জলকামানের ব্যবহার পুলিশের। মঙ্গলবার, হাওড়া সেতুতে ওঠার মুখে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

গাড়ি ভাড়া করে গেলে পাছে পুলিশ আটকায়, সেই আশঙ্কায় মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানে যোগ দিতে হুগলির বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রেনে হাওড়ায় গেলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা।

Advertisement

বিজেপির সূত্রের খবর, দলের শ্রীরামপুর এবং হুগলি সাংগঠনিক জেলা থেকে দু’হাজার করে লোক অভিযানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন স্টেশন থেকে বিজেপির লোকেরা হাওড়ামুখী ট্রেন ধরেন। বিভিন্ন স্টেশনে চন্দননগর কমিশনারেট এবং হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশের নজরদারি ছিল। এক বিজেপি কর্মী বলেন, ‘‘আমরা জাতীয় পতাকা নিয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশের নজর এড়াতে পতাকা গুটিয়ে রেখেছিলাম। হাওড়ায় গিয়ে বের করি।’’ বাপন হাজরা নামে দলের এক মণ্ডল সভাপতি হুগলি স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে নবান্ন অভিযানে যান। তাঁর কথায়, ‘‘অভিভাবক হিসেবে ছেলের সঙ্গে যাচ্ছি।’’

হুগলি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি তুষার মজুমদার বলেন, ‘‘অভিযানে আমাদের অনেক কর্মীই জখম হয়েছেন।’’ দলের অন্য এক নেতার দাবি, ‘‘আমাদের কমবেশি ১৭ জন কর্মী আহত হয়েছেন। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কর্মীরাও জখম হয়েছেন পুলিশের লাঠিতে।’’

বিজেপি সূত্রের দাবি, ডানকুনি সহ কর্ড শাখার বিভিন্ন স্টেশনে দলীয় কর্মীদের জমায়েতের কথা ছিল। কিন্তু স্টেশনে পুলিশ নজরদারি চালানোয় অনেকেই যাননি। দলের শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদক সাঁতরাগাছিতে পুলিশের লাঠিতে জখম হন বলে অভিযোগ। মোহন বলেন, ‘‘হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে দেখি প্রচুর পুলিশ। তখন আমরা সাঁতরাগাছি স্টেশন হয়ে নবান্নের উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করি। সাঁতরাগাছিতে পুলিশের ব্যারিকেডের কাছে পৌঁছতেই এক আইপিএসের নেতৃত্বে আমাদের উপরে বেধড়ক লাঠি চালানো হয়। লাঠির ঘায়ে আমাদের প্রায় ৫০ জন কর্মী-সমর্থক জখম হন। সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়।’’

ডানকুনিতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজ়া সহ বিভিন্ন রাস্তায় কলকাতামুখী গাড়ির উপরে নজরদারি চালায় পুলিশ।

আরামবাগ মহকুমা থেকেও অনেকেই ট্রেনে হাওড়ায় গিয়েছেন। বিজেপির আরামবাগের বিধায়ক মধুসূদন বাগ এবং গোঘাটের বিশ্বনাথ কারকও ট্রেনে গিয়েছেন। মধুসূদনের অভিযোগ, ‘‘হাওড়া ময়দানের পুলিশি ব্যারিকেড থেকে এগানো গেল না। পুলিশ ধৈর্য্য না রেখে শান্তিপূর্ণ মিছিলে জল কামান এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করল।’’ হাওড়ার দিক থেকে দেড় কিমি এগিয়ে আটকে পড়েন জানিয়ে বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘মিছিলে বাইরে
থেকে ইট পড়তেই ছেলেরা একটি ব্যারিকেড ভেঙে শান্তিপূর্ণ ভাবেই স্লোগান দিতে দিতে এগোচ্ছিলেন। নবান্নের দেড় কিমি তফাতে ব্যারিকেডের কাছাকাছি যাওয়ামাত্র কাঁদানে গ্যাস ছুড়ল পুলিশ।’’

বিজেপির দাবি, আরামবার মহকুমা থেকে তিন হাজারের বেশি মানুষ অভিযানে সামিল হন। অধিকাংশই ট্রেনে গিয়েছেন। কিছু গিয়েছেন গাড়ি ভাড়া করে। মহকুমার দূরপাল্লা এবং স্থানীয় রুটের বাসমালিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, একটিও বাস ভাড়া করা হয়নি। তবে রাস্তাঘাট কার্যত ফাঁকা ছিল। কেন? দূরপাল্লার বাস মালিক সংগঠনের (হুগলি ইন্টার রিজিয়ন) সম্পাদক গৌতম ধোলের বক্তব্য, ‘‘আবহাওয়া খারাপ থাকায় অনেকে বাস নামাননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement