Nabanna Abhijan

রাস্তা ফাঁকা, পড়ে রইল চিঁড়ে-বাতাসা 

মুম্বই রোডে আন্দোলনকারীদের গাড়ি চোখে পড়েনি। জাতীয় পতাকা হাতে কিছু জনকে সকালে বাগনান, উলুবেড়িয়া ইত্যাদি স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতে দেখা যায়।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৪ ০৮:০১
জাতীয় সড়কের পাশে খাবার নিয়ে বসে বিজেপি কর্মীরা। ছাত্রদের দেখা নেই। উলুবেড়িয়ার মনসাতলায়।

জাতীয় সড়কের পাশে খাবার নিয়ে বসে বিজেপি কর্মীরা। ছাত্রদের দেখা নেই। উলুবেড়িয়ার মনসাতলায়। ছবি: সুব্রত জানা।

ছাত্রদের ডাকা নবান্ন অভিযানকে ঠেকাতে পুলিশি ব্যবস্থার জেরে মঙ্গলবার কার্যত দুর্গের চেহারা নিয়েছিল বিভিন্ন রাস্তা। অভিযানকে কেন্দ্র করে মুম্বই রোড সহ গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ছিল শুনশান। অল্প সংখ্যক মানুষ পথে বেরিয়েছেন। যানবাহন ছিল হাতে গোনা।

Advertisement

মুম্বই রোডে আন্দোলনকারীদের গাড়ি চোখে পড়েনি। জাতীয় পতাকা হাতে কিছু জনকে সকালে বাগনান, উলুবেড়িয়া ইত্যাদি স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতে দেখা যায়। তাঁদের অনেকেই বিজেপির পরিচিত মুখ। অনেক প্রবীণ নেতাও ছিলেন। হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, দলের হয়ে কেউ নবান্ন অভিযানে যোগ দেননি। ছাত্রদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানোর জন্য ব্যক্তিগত ভাবে কেউ কেউ যেতে পারেন।

সকালে অঝোরে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তায় এমনিতেই গাড়ি কম ছিল। বেলায় বৃষ্টি কমে গেলেও মুম্বই রোড থেকে গাড়ি কার্যত উধাও হয়ে যায়। ওই সড়ক সংলগ্ন এলাকা কার্যত বন্‌ধের চেহারা নেয়। অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে এ দিন হাওড়া স্টেশনে বাস নিয়ে যেতে নিষেধ করা হয়। তা ছাড়া, পুলিশের নির্দেশিকা অনুযায়ী সকালের পরে যে কোনও সময়ে হাওড়ার রবীন্দ্র সেতু ও বিদ্যাসাগর সেতুতে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল। কলকাতায় যাওয়ার জন্যে নিবেদিতা সেতু ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয় হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে।

পুলিশের এই নির্দেশ জানার পরে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ইত্যাদি জেলা থেকে হাওড়া ও কলকাতার দিকে কয়েকশো দূরপাল্লার বাসের দেখা মেলেনি বললেই হয়। প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডের বেশ কিছু বাস যেগুলি হাওড়া স্টেশন, সাঁতরাগাছি, ধর্মতলা, কলকাতা, বারুইপুর, ব্যারাকপুর প্রভৃতি রূটে চলাচল করে, এমন প্রায় বারোশো বাসও চলেনি। নাইট সার্ভিসের গুটিকয়েক বাস সকালে হাওড়া স্টেশনে এসেছিল। যাত্রী নামিয়ে দ্রুত তারা নিরাপদ জায়গায় চলে যায়। গুটিকয়েক সরকারি বাস চললেও যাত্রী ছিল না। পুলিশের বক্তব্য, নবান্ন অভিযানের ফলেই বাসের সংখ্যা কম ছিল।

অভিযানে যোগদানকারীদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন জায়গায় শিবির করেছিল বিজেপি। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার বন্দোবস্ত ছিল। উলুবেড়িয়ার মনসাতলায় মুম্বাই রোডের ধারে একটি শিবিরে জল ও চিঁড়ে-বাতাসার বন্দোবস্ত করেছিলেন হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপি কর্মীরা। সে সব নিয়ে জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তার ধারে তাঁরা দাঁড়িয়েও ছিলেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের গাড়ি না দেখে তাঁরা কার্যত হতাশ হন। ধূলাগড়ি টোল প্লাজ়ার কাছে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল। সাঁকরাইল বিধানসভার বিজেপির সহ আহ্বায়ক শ্রবণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘নবান্ন অভিযানে যদি কেউ আহত হন, সেই জন্য দলের তরফে নানা জায়গায় মেডিক্যাল ক্যাম্প করা হয়েছে। আমাকে সাঁতরাগাছি ক্যাম্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়।’’

নবান্ন অভিযানে ছাত্রদের উপরে পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগে বিকেল ৪টে নাগাদ উলুবেড়িয়া কামারশালা মোড়ে ওটি রোড অবরোধ করেন বিজেপির লোকেরা। প্রায়
আধ ঘণ্টা পরে পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement