হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
দু'মাসের বকেয়া মজুরির দাবিতে ১৯ দিন ধরে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মীরা কর্মবিরতি চালিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে সকলকে টাকা দিয়ে দেওয়া হবে, এই আশ্বাসে শুক্রবার আন্দোলন থামল। কাজও শুরু হল।
এ দিন পুরসভায় এসে এলাকার বিধায়ক অসিত মজুমদার জনসমক্ষে বকেয়া মেটানোর কথা ঘোষণা করেন। খরচ হবে তিন কোটি টাকা। অসিত এবং পুরপ্রধান অমিত রায়ের ঘোষণা, ‘‘এই পুরসভার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেছেন। তাই রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ওই ৩ কোটি টাকা ধার দিচ্ছে। সামনের বছর পুরসভার আয় থেকে আমরা সেই টাকা শোধ করব।’’ আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহেই সব অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মীর মজুরি দিয়ে দেওয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ওই দু’জন।
এই ঘোষণামাত্র উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন আন্দোলনকারীরা। নিজে হাতে নর্দমায় কোদাল চালিয়ে কর্মবিরতি ভেঙে কাজের সূচনা করেন বিধায়ক। অস্থায়ী শ্রমিকেরাও যোগ দেন। দাবিগুলি উচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরার জন্য মহকুমাশাসক (সদর) স্মিতা সান্যাল শুক্লকে ধন্যবাদ
জানিয়েছেন তাঁরা।
আন্দোলনকারীদের পক্ষে রাধেশ্যাম শঙ্খবণিক বলেন, ‘‘আন্দোলনের জয় হয়েছে।’’ বিধায়কও আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘‘আমিও শ্রমিক আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছি। পুরসভার সব অস্থায়ী কর্মীদের শুভেচ্ছা।’’
এতদিন কর্মবিরতি চলায় শহর জুড়ে আবর্জনা জমেছে। পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারীর আশ্বাস, ‘‘২৫ ডিসেম্বরের আগে শহরের বড় রাস্তার আশপাশ পরিষ্কার করা হবে।’’ স্যানিটারি ইনস্পেক্টর হিমাংশু চক্রবর্তী জানান, রাস্তাঘাট পরিষ্কারের ব্যাপারে আগামী রবিবারের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘টানা কয়েক পরিষ্কারের কাজ চলবে।’’
বৃহস্পতিবার বিকেলে চুঁচুড়ায় জেলাশাসকের দফতরে এই পুরসভার উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে হাজির হন রাজ্যের নগরোন্নয়ন সংস্থার (সুডা) অধিকর্তা জলি চৌধুরী। ওই দিন প্রশাসন বৈঠক নিয়ে কিছু না জানালেও বিধায়ক জানিয়েছিলেন, শুক্রবারই সমস্যা মিটবে। তবে, কী ভাবে বকেয়া কবে মেটানো হবে সে বিষয়ে তখন খোলসা করেননি তিনি।
এ দিনও সকাল থেকে পুরভবনের গেটে অবস্থান করছিলেন আন্দোলনকারীরা। সকাল ১০টা নাগাদ সকল পুর-সদস্যদের (কাউন্সিলর) নিয়ে বৈঠকে বসেন অসিত। এরপর পুর-পারিষদ এবং আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক সারেন। ওই বৈঠক শেষেই ডাকা হয় শ্রমিক-কর্মী প্রতিনিধিদের। দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনার পরে বাইরে বেরিয়ে আন্দোলনকারীদের মাইকেই বকেয়া মেটানোর বিষয়ে ঘোষণা করেন অসিত-অমিত।