Robbed and Lynched

কনেযাত্রীদের অটো থামিয়ে লুট, মারধর

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচলার মেজুটি থেকে ১১টি অটোতে বেশ কিছু কনেযাত্রী উলুবেড়িয়ার মৌবেশিয়ায় বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ০৮:৫০
ছিনতাইয়ের পর কনেযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ।

ছিনতাইয়ের পর কনেযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

গ্রামীণ হাওড়ার পথেঘাটে ছিনতাই-লুটপাট বাড়ছে। পর পর দু’দিনে এমনই দু’টি ঘটনায় সাধারণ মানুষ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। ছড়িয়েছে আতঙ্কও।

Advertisement

বুধবার গভীর রাতে উলুবেড়িয়ার মুম্বই রোডের নরেন্দ্র মোড়ের কাছে কনেযাত্রীদের একটি অটো থামিয়ে লুটপাট চালায় মোটরবাইকে আসা দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, মারধর করে ছিনিয়ে নেওয়া হয় মহিলাদের সোনার হার, আংটি, কানের দুল, মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা। সেই সময় আর একটি অটোতে কন্যাযাত্রীদের আরও একটি দল চলে এলে দু’পক্ষের হাতাহাতি হয়। দুষ্কৃতীদের মারে কয়েকজন আহত হন। দু’তিন জনের মাথা ফেটে যায়। পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেয়। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ওই রাতেই পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচলার মেজুটি থেকে ১১টি অটোতে বেশ কিছু কনেযাত্রী উলুবেড়িয়ার মৌবেশিয়ায় বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। ফেরার সময় ১১টি অটো একসঙ্গে ছাড়লেও যে যার মতো এগিয়ে যায়। রাত দেড়টা নাগাদ একটি অটো নরেন্দ্র মোড়ে জাতীয় সড়কে উঠতেই সামনে মোটরবাইক আরোহী দুই যুবক এসে পথ
আটকায়। ওই অটোতে ছিলেন পাঁচ মহিলা-সহ আট জন। বাইক
আরোহীরা অটোচালকের বিরুদ্ধে ধাক্কা মারার মিথ্যা অভিযোগ তুলে অটোর চাবি খুলে নিয়ে তাঁকে প্রথমে মারধর করে বলে অভিযোগ। অটোর সামনের কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। এরপরেই লুটপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ। কিছুক্ষণ পরে কনেযাত্রীদের অন্য একটি অটো ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। সেই অটোর যাত্রীদের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের হাতাহাতি শুরু হলে আরও কয়েকজন যুবক এসে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগ দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসতেই দুষ্কৃতীরা পালায়।

দ্বিতীয় অটোতে থাকা অনিমেষ দলুই নাম এক কনেযাত্রী বলেন, ‘‘আমরা দেখতে পেলাম, সামনের অটোর লোকজনকে মারধর করা হচ্ছে। গাড়ি থেকে নেমে প্রতিবাদ করতেই আমাদেরও মারধর করতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যে আরও কয়েকজন যুবক ঘটনাস্থলে এসে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগ দেয়।’’

বছর খানেকের মধ্যে এই জাতীয় সড়কে বেশ কিছু ছিনতাই-লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোনওটারই কিনারা করতে পারেনি। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, সন্ধ্যার পর থেকে জাতীয় সড়কে অবাধে ঘোরে দুষ্কৃতীরা। পুলিশের টহলদারি না থাকার জন্য
এই অবস্থা।

অভিযোগ মানেনি পুলিশ। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সব সময় জাতীয় সড়কে টহলদারি চলে। তা আরও বাড়ানো হবে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ ধৃতকে বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়া আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

অন্য ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার সকালে, জগৎবল্লভপুরের মাজুতে। চংঘুরালি শেখপাড়ার বাসিন্দা জোহরা বেগম নামে এক বৃদ্ধা বাগনানে মেয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। তিনি জানান, বাড়ি থেকে বেরোনোর কিছুটা পর থেকে বাইকআরোহী দুই যুবক তাঁর পিছু নেয়। মাজুর কাছাকাছি নির্জন যায়গায় বাইক থামিয়ে এক দূষ্কৃতী বাইক থেকে নেমে এসে তাঁর গলার সোনার হার ছিনিয়ে পালায়।

আর মেয়ের বাড়ি যাননি বৃদ্ধা। ঘটনার পরে তিনি বাড়ি ফিরে যান। খবর পেয়ে পুলিশ যায়। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে গিয়ে লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, জগৎবল্লভপুরে কিছুদিন ধরেই চুরি-ছিনতাই বাড়ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement