Fireworks Hooghly

বিয়ের মরসুমে বাজির দাপট ফিরল হুগলিতে

বাহির শ্রীরামপুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরাও অতিষ্ঠ। মূলত অভিজাত শ্রেণির মানুষ ভাড়া নেন, এমন একটি অনুষ্ঠান ভবনে বাজির বেপরোয়া প্রদর্শনী বেশি।

Advertisement
গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়  , প্রকাশ পাল
শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:২৬
এভাবেই পোড়ানো হয় বাজি।

এভাবেই পোড়ানো হয় বাজি। নিজস্ব চিত্র।

বিয়ের মরসুম। অনুষ্ঠান ভবন থেকে দূরে বাড়িতে বসেও তা বিলক্ষণ টের পাচ্ছেন হুগলির নানা প্রান্তের সাধারণ মানুষ। সন্ধে বা মাঝরাত— আকাশ কাঁপানো বাজিতেই তা মালুম হচ্ছে। শূন্যে উঠে রং ছড়িয়ে বিকট শব্দে বাজি ফাটতে দেখে আনন্দ করছেন এক শ্রেণির মানুষ। আর হৃদরোগী বা স্নায়ুরোগীদের পিলে চমকে যাচ্ছে!

Advertisement

যখন খুশি বাজি পোড়ানো যে নিষেধ এবং এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা রয়েছে, কে বলবে! বাজি বন্ধে পুলিশ-প্রশাসন বা পুরসভার অনীহা ভুক্তভোগীদের রীতিমতো চর্চার বিষয়। তাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কিছু যায় আসে কি না, সেটাই প্রশ্ন। এ ব্যাপারে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ভূমিকাও কার্যত চোখে পড়ে না বলে পরিবেশকর্মীদের ক্ষোভ।

বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পরেও বাজির আওয়াজ শোনা গিয়েছে শ্রীরামপুরের মাহেশে। বাহির শ্রীরামপুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরাও অতিষ্ঠ। মূলত অভিজাত শ্রেণির মানুষ ভাড়া নেন, এমন একটি অনুষ্ঠান ভবনে বাজির বেপরোয়া প্রদর্শনী বেশি। ভদ্রেশ্বরের একাধিক বিয়েবাড়ি থেকেও প্রায়ই অভিযোগ মেলে।

উত্তরপাড়ায় প্রায় ৫০টি ভাড়াবাড়ি রয়েছে, যেখানে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, শীতের রাতে নৈঃশব্দ্য ভেদ করে বাজি ফাটছে বিয়েবাড়ি থাকলেই। রাজমোহন রোড থেকে দোলতলা, মধ্য ভদ্রকালী, হিন্দমোটর, মাখলা— সর্বত্রই রয়েছে এমন অনুষ্ঠান বাড়ি। এগুলির অনেক জায়গাতেই বাজির দৌরাত্ম্যে নাকাল স্থানীয়েরা। অথচ, প্রতিকার নেই! জেলার অন্য শহরেও সমস্যাকমবেশি রয়েছে।

বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চের তরফে গৌতম সরকার জানান, হুগলির বিভিন্ন শহর থেকেই তাঁদের কাছে বিয়েবাড়িতে বাজি ফাটানোর অভিযোগ আসছে। অভিযোগ বেশি ভদ্রেশ্বর এবং শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটী, ডানকুনি ও চুঁচুড়া থেকে মিলছে। তাঁর কথায়, ‘‘স্নায়ুরোগে অসুস্থ দক্ষিণ চন্দননগরের এক সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তি তো প্রায় প্রতিদিন সমস্যার কথা জানাচ্ছেন। জেলার প্রত্যেক পুরসভায় আমরা চিঠি দেব, যাতে তারা অনুষ্ঠান বাড়িতে বাজি বন্ধে ব্যবস্থা নেন।’’

বাস্তব মেনেও যাঁদের বাড়ির অনুষ্ঠান, সেই পরিবারের শুভবুদ্ধির উপরেই কার্যত বিষয়টি ছেড়েছেন পুরপ্রধান দিলীপ যাদব। তাঁর সংযোজন, ‘‘অনুষ্ঠান বাড়ির মালিকদের কাছেও আবেদন, সচেতন হোন। প্রশাসন কড়া হলে আপনাদের সমস্যা বাড়বে।’’ শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা বলেন, ‘‘অনুষ্ঠান বাড়ির কর্তৃপক্ষকে আমরা আগেও সতর্ক করেছি। ফের করা হবে। নিয়ম ভেঙে বাজি পোড়ানো হলে পুরসভা যথাযথ পদক্ষেপ করবে। বিষয়টি আমাদের তরফে পুলিশকেও অবগত করা হবে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন