বীজ আলু নিয়ে বাড়ির পথে চাষিরা। নিজস্ব চিত্র।
আলুর মরসুম শুরুর মুখেই ‘বীজ আলু’র চড়া দামে জেরবার হচ্ছেন চাষিরা। গত মরসুমের থেকে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি বস্তা) এ বার এক থেকে দেড় হাজার টাকা করে বেশি দাম
আলু বীজের। ঘূর্ণিঝড় দানার দাপটে চলতি মরশুমে শুধু আমন ধানের ক্ষতিই হয়নি, মাটি ভিজে থাকায় আলু চাষ পিছিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ধান চাষের ক্ষতি যে সমস্ত চাষিরা আলুতে পুষিয়ে নেবেন বলে মনস্থির করে ছিলেন তাঁরা
কিছুটা আশাহত।
রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোর মধ্যে হুগলি, বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে আলুর চাষ সব থেকে বেশি হয়। এই সমস্ত জেলার চাষিরা সাধারণ ভাবে জমি থেকে আমন ধান উঠে যাওয়ার পরই আলু চাষের প্রস্তুতি শুরু করেন। শুকনো জমিতে ঝুরঝুরে মাটি ছাড়া আলু চাষ শুরু করা যায় না। এ বার জমি ভিজে থাকায় বিশেষত নদীর গা-ঘেঁষে যে সমস্ত জমি রয়েছে সেখানে তাই এখনই আলু চাষ শুরু করা যাচ্ছে না। তার উপর বীজ আলুর দাম বড় বালাই।
বৃহস্পতিবারই আনাজের পাশাপাশি আলুর দাম নিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের কাছে কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তারকেশ্বরের গোপীনগর পারাম্বুয়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা সমরেশ ঘোষ বলেন, ‘‘ইচ্ছে থাকলেও এ বার আমি ৮ বিঘের বেশি জমিতে আলু চাষ করতে পারব না। জ্যোতি আলুর বীজের বস্তার দাম ২৭০০ থেকে ২৮০০ টাকা। আর চন্দ্রমুখীর দাম ৩৭০০ থেকে ৩৮০০ টাকা। এর আগের বছর এই দাম প্রায় দেড় হাজার টাকা কম ছিল।’’
ধনেখালি কানানদী এলাকার এক চাষির কথায়, ‘‘খাবার আলুর দাম কমাতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উনি বীজ আলুর উল্লেখ করলেন না তো? বাম আমলের মতো এই সরকারের আমলেও জেলায় শাসকদের অনেক কেষ্টবিষ্টুরা বীজ আলুর ব্যবসায় যুক্ত। তাঁরাই আর বাজারের প্রকৃত চেহারা প্রশাসনকে জানাচ্ছেন না।’’
যদিও জেলা কৃষি দফতরের এক কর্তা অবশ্য বলেন,‘‘আলু বীজের বিষয় সরাসরি কৃষি দফতর দেখে না। সরকারি টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা এই জেলাতেও রয়েছেন। তারা সঠিক সময়ে সবটাই সরকারকে জানাবেন।’’