মিলছে না বেতন, পুজোয় মুখে হাসি নেই লঞ্চ কর্মীদের মুখে

দীর্ঘ দিন ধরে অচলাবস্থা চলছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতিতে। অভিযোগ, কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। লঞ্চগুলিরও ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩ ২১:০৬

—নিজস্ব চিত্র।

পুজোর আর কয়েক দিন বাকি। রাজ্যবাসী যখন উৎসবের মেজাজে মেতে উঠতে শুরু করেছেন, তখন হাসি নেই হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির কর্মচারীদের মুখে। কারণ, অভিযোগ, দু’মাসের বকেয়া টাকা পাননি তাঁরা! কর্তৃপক্ষ পুজোয় বোনাসের আশ্বাস দিলেও তা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সন্দিহান তাঁদের অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, সরকারি হস্তক্ষেপ ও ভাড়া না বাড়লে সংস্থার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতই।

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরে অচলাবস্থা চলছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতিতে। অভিযোগ, কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। লঞ্চগুলিরও ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। এই সমবায় সমিতির অধীনে ১৩টি বড় লঞ্চ ও আটটি ছোট কাঠের লঞ্চ রয়েছে। হাওড়া থেকে শোভাবাজার, বাগবাজার, আর্মেনিয়াম, বাবুঘাট-সহ আরও কিছু রুটে এই লঞ্চগুলি যাতায়াত করে। কর্মচারীরা জানান, বেতন না মেলায় পুজোয় পরিবারের জন্য কী ভাবে কেনাকাটা করবেন, তা জানেন না তাঁরা। নীলয় চক্রবর্তী নামে এক কর্মী জানান, লোকসানে চলছে সংস্থায়। লঞ্চের ভাড়া না বাড়ালে এবং সরকারি হস্তক্ষেপ না হলে ভবিষ্যতে হয়তো এই গুরুত্বপূর্ণ লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাবে। সংস্থার পক্ষ থেকে বোনাস দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কর্মীরা এই সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন।

সমবায় সমিতির স্পেশ্যাল অফিসার জয় ধর পরিস্থিতির কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, কোভিডের সময় থেকে সমস্যা শুরু হয়। লঞ্চগুলি বন্ধ অবস্থায় পড়েছিল। রাজ্য সরকার দু’দফায় আট কোটি টাকা দিয়েছিল। কিন্তু লঞ্চ রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মচারীদের মাইনে হয়নি সেই টাকায়। তা ছাড়া অন্যান্য পরিবহণের ক্ষেত্রে ভাড়া বাড়লেও এখানে দীর্ঘ দিন ধরে ছ’টাকা ভাড়া রয়েছে। ফলে লোকসান হচ্ছে। দু’মাসের বকেয়া বাকি স্থায়ী-অস্থায়ী প্রায় ৩০০ জনের। পুজোর আগে অন্তত বোনাস দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জয় বলেন, ‘‘লঞ্চগুলির ফিটনেস শেষ হয়ে যাচ্ছে আগামী জানুয়ারি মাসে। নতুন ফিটনেস করাতে খরচ প্রচুর হবে। এর মধ্যে ফিটনেস সার্টিফিকেট না হলে বন্ধ হয়ে যাবে এই সমস্ত রুটে লঞ্চ পরিষেবা। তবে পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। সেখান থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি লঞ্চ ভাড়া কমপক্ষে দু’টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই রুটগুলোতে বছরে প্রায় এক কোটি তিরিশ লাখ মানুষ যাতায়াত করেন। ভাড়া বাড়লে দু’কোটি ষাট লাখ টাকা আয় হবে। এর ফলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। তা নাহলে এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement