flood

প্লাবনে ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হুগলিতে

প্লাবনের প্রভাব পুরশুড়া, আরামবাগ এবং গোঘাটের দু’টি ব্লকে বিশেষ পড়েনি বলে জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement
পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:১১
খানাকুল ১ ব্লকের কিশোরপুর  ১ পঞ্চায়েত এলাকার বামনখানায় ক্ষতিগ্রস্ত ধানের জমি।

খানাকুল ১ ব্লকের কিশোরপুর ১ পঞ্চায়েত এলাকার বামনখানায় ক্ষতিগ্রস্ত ধানের জমি। —নিজস্ব চিত্র।

নিম্নচাপের বৃষ্টি এবং ডিভিসি-র ছাড়া জলে ক’দিন আগেই প্লাবিত হয়েছিল হুগলির আরামবাগ মহকুমার দু’টি ব্লক (খানাকুল ১ ও ২) এবং তারকেশ্বর ও জাঙ্গিপাড়া। জল নেমে যাওয়ার পরে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করে জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে, ওই সব এলাকার ১২০টি মৌজায় কৃষিতেক্ষতি হয়েছে।

Advertisement

জেলা কৃষি দফতরের এক কর্ত বলেন, ‘‘মোট ১২০টি মৌজার ধান, বাদাম ও আনাজ মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে প্রায় ১১১ কোটি ২ লক্ষ টাকা। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব রাজ্য স্তরে পাঠানো হচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, আনাজের ক্ষেত্রে উদ্যানপালন দফতরের ব্লক এলাকায় কোনও পরিকাঠামো না থাকায় কৃষি দফতরই হিসাব রাখে।

ধান ও আনাজে ক্ষতি হয়েছে ওই চার ব্লকেই। আর মাছ চাষে মূলত খানাকুল ২ এবং জাঙ্গিপাড়া ব্লকে। প্লাবনের প্রভাব পুরশুড়া, আরামবাগ এবং গোঘাটের দু’টি ব্লকে বিশেষ পড়েনি বলে জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মাছ চাষে খালি খানাকুল ২ এবং জাঙ্গিপাড়া ব্লকের বেশ কিছু পুকুর উপচে মাছ ভেসে গিয়েছে। জেলা মৎস্য দফতরের সহ-অধিকর্তা সুব্রত সরকার বলেন, ‘‘খানাকুল ২ ব্লকে ১০০ হেক্টর এবং জাঙ্গিপাড়ার ৩৮ হেক্টর এলাকার পুকুর জলমগ্ন হয়েছে বলে রিপোর্ট পেয়েছি। টাকার অঙ্কে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব চলছে।’’

জেলার মধ্যে আরামবাগ মহকুমার ৬টি ব্লক এলাকাই বন্যাপ্রবণ বলে চিহ্নিত।

মহকুমা দিয়ে বয়ে গিয়েছে চারটি নদ-নদী। পূর্ব বর্ধমানের দিক থেকে এসেছে দামোদর নদ ও তার শাখা মুণ্ডেশ্বরী নদী। বাঁকুড়ার দিক থেকে এসেছে দ্বারকেশ্বর। মহকুমার দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে রূপনারায়ণ।

দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরী ছাপিয়ে পুরশুড়া ও আরামবাগ ব্লকের অংশবিশেষ প্লাবিত হলেও সেই জল দ্রুত নেমে যাওয়ায় আমন ধান বা অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হয়নি। একই ভাবে দ্বারকেশ্বর নদে একদিন মাত্র বিপদসীমার উপর দিয়ে জল বইলেও পরের দিনেই তা নেমে গেলে গোঘাটের দু’টি ব্লকও কার্যত বাঁচে।

তবে, রূপনারায়ণে টানা চার দিন চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে জল বয়ে গিয়েছিল।দিন সাতেক ধরে ডুবে থাকে খানাকুলের দু’টি ব্লকের এলাকার অধিকাংশ পঞ্চায়েত এলাকা। ফলে, ফসল বাঁচানোর কোনও সুযোগ ছিল না বলে কৃষি দফতর জানিয়েছে।

আরামবাগের মহকুমাশাসক সুভাষিণী ই বলেন, ‘‘কৃষি দফতরের হিসাব অনুযায়ী মহকুমায় মোট ৮৮২৪ হেক্টর জমির ফসলের ১০০ শতাংশেরই ক্ষতি হয়েছে।’’

মহকুমা এবং ব্লক কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খানাকুল ১ ব্লকের ৪৩৭৪ হেক্টর এবং খানাকুল ২ ব্লকের ৪১২৫ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া, বিক্ষিপ্ত ভাবে আরামবাগ, পুরশুড়া এবং গোঘাটের দু’টি ব্লকের জলা এলাকাগুলির ফসলের ক্ষতি হয়।

আরও পড়ুন
Advertisement