West Bengal SSC Scam

আশি বছরেও শিক্ষকতা করেন বাবা, আর ছেলেই কি না এমন হল! জামাইকে নিয়ে খেদ অয়নের শ্বশুরের

স্বাস্থ্য দফতরের প্রাক্তন কর্মী মনোরঞ্জন দাস। তাঁর মেয়ে কাকলির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় অয়ন শীলের। দুই তরফের পরিবার আয়োজন করা হয় বিয়ের। মনোরঞ্জনের দাবি, এক সময় ‘ইনোসেন্ট’ ছিলেন অয়ন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৩ ১৮:২৩
Ayan Shil\\\\\\\\\\\\\\\'s father in law speaks about his son in law

অয়ন শীলকে নিয়ে মুখ খুললেন তাঁর শ্বশুর মনোরঞ্জন দাস। — নিজস্ব চিত্র।

দুই দশকেরও বেশি সময় আগে তাঁর মেয়ে কাকলির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল হুগলির চুঁচুড়ার জগুদাসপাড়ার বাসিন্দা অয়ন শীলের। সেই অয়নকে নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। জামাইকে নিয়ে এ বার মুখ খুললেন চুঁচুড়ার কারবালা মোড় এলাকার বাসিন্দা মনোরঞ্জন দাস। তাঁর মতে, ‘বিপুল চাহিদা’ থেকেই এই পথে পা বাড়িয়েছিলেন অয়ন। তবে অয়নকে ব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন মনোরঞ্জন।

স্বাস্থ্য দফতরের প্রাক্তন কর্মী মনোরঞ্জন। তাঁর মেয়ে কাকলির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল অয়নের। তার পর দুই পরিবারের তরফে আয়োজন করা হয় বিয়ের। মনোরঞ্জনের দাবি, প্রথম প্রথম ‘ইনোসেন্ট’ ছিলেন অয়ন। তিনি বলেন, ‘‘জামাই প্রোমোটারি করে এবং কম্পিউটার নিয়ে কাজ করে। এটাই আমরা জানতাম।’’ কিন্তু এক সময়ের ‘ইনোসেন্ট’ অয়ন এখন ইডির হাতে গ্রেফতার। এ নিয়ে মনোরঞ্জন বলেন, ‘‘ও পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। পরিস্থিতি মানুষের পরিবর্তন ঘটায়।’’ তবে অয়নের মধ্যে যে ইদানীং পরিবর্তন এসেছিল সে কথা স্বীকার করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বর্তমান সমাজ চলছে কে কাকে ছেড়ে এগিয়ে যাবে এই নীতিতে বিশ্বাস করে। অয়নের অর্থনৈতিক টানাটানি ছিল কি না আমার জানা নেই। ও প্রোমোটারি করত। আমি গরিব মানুষ। বিয়ের পর এখানে খুব একটা আসত না জামাই। তবে আমরা কোনও অনুষ্ঠান হলে ওর বাড়িতে যেতাম।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এটা আর কিছু না, আরও চাই, আরও চাই— এটাই সমস্যা হয়ে গিয়েছে।’’ মনোরঞ্জনের মতে, ‘‘ওকে (অয়ন) ব্যবহার করা হয়েছে মনে হচ্ছে। এক জন ভাল কম্পিউটার বিশেষজ্ঞকে ব্যবহার করা হয়েছে।’’

Advertisement

অয়নের স্ত্রী কাকলি বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে থাকেন দিল্লিতে। নিয়োগ দুর্নীতিতে জামাই গ্রেফতার হওয়ার পর মনোরঞ্জনের দাবি, ‘‘আমার মেয়ে এত গভীরে জানত না। ও জানলে আমরাও জানতাম। মেয়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। মেয়ে সব শুনে হতবাক।’’

চুঁচুড়ার জগুদাসপাড়ায় বাড়ি অয়নের। সেখানে থাকেন তাঁর বাবা সদানন্দ শীল এবং মা অমিতা শীল। চাকরি জীবন থেকে অবসরের পর গৃহশিক্ষকতা করেন অশীতিপর সদানন্দ। মনোরঞ্জন বলেন, ‘‘অয়নের বাবা খুবই ভদ্র এবং মার্জিত। গতকালও বেয়াইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল। আমি বলেছিলাম, আপনার জ্ঞানকে সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। আপনার ছেলেকে পরামর্শ দিলেন না কেন? উনি আমাকে বললেন, ‘‘আমরা এটা বুঝতে পারিনি।’’ অয়নের মা প্রবীণা, বাবা বেঁকে গিয়েছেন। তিনি এখনও পড়াচ্ছেন। অন্য ছেলেদের পড়াতে গিয়ে নিজের ছেলেই এমন হয়ে গেল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement