Junior Doctor’s Hunger Strike

সর্ব ক্ষণ শরীরে যন্ত্রণা, তবু দাবি আদায়ের অনশনে অনড় অর্ণব, সায়ন্তনী, স্নিগ্ধারা, কে কেমন আছেন?

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে গত ১৪ অক্টোবর থেকে অনশন করছেন জুনিয়র ডাক্তার সন্দীপ। শনিবার সকালে তাঁর তলপেটে ব্যথা শুরু হলে পরীক্ষা করাতে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৪৩
অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন চিকিৎসক।

অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন চিকিৎসক। — ফাইল চিত্র।

ধর্মতলায় অর্ণব মুখোপাধ্যায়, স্নিগ্ধা হাজরা এবং সায়ন্তনী ঘোষ হাজরার ‘আমরণ অনশন’ পঞ্চদশ দিনে পড়ল। শরীর ক্রমেই ভাঙছে তাঁদের। সর্ব ক্ষণ যন্ত্রণা হচ্ছে। সঙ্গে দুর্বলতা রয়েছে। তবু অনশন বন্ধ করতে নারাজ অর্ণব, স্নিগ্ধা, সায়ন্তনীরা। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা জানাচ্ছেন, মানসিক শক্তিতেই তাঁরা অনশন করে চলেছেন। তাঁদের দেখে মনের জোর পাচ্ছেন পরিচয় পণ্ডা, অলোলিকা ঘডুই, রুমেলিকা কুমার, স্পন্দন চৌধুরী এবং সুদীপ্ত মণ্ডল। এখন ১০ দফা দাবিতে অনশন করছেন মোট আট জন জুনিয়র ডাক্তার।

Advertisement

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এসএসকেএমের নেফ্রোলজি বিভাগের পিডিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়া অর্ণব, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ক্যানসার বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার স্নিগ্ধা, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের প্যাথোলজি বিভাগের পিজিটি তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া সায়ন্তনী, তিন জনেরই শরীরে সর্ব ক্ষণ যন্ত্রণা হয়ে চলেছে। কিটোন বডির মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে দুর্বলতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে তিন অনশনকারীর। যদিও অনশন ছাড়তে তাঁরা নারাজ। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, মনের জোরেই গত ৫ অক্টোবর থেকে অনশন চালাচ্ছেন এই তিন জন। আর তাঁদের থেকে মনের জোর পাচ্ছেন বাকি পাঁচ অনশনকারী চিকিৎসক।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

১১ অক্টোবর থেকে অনশন করছেন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের পিজিটি অলোলিকা এবং ভিআইএমএস (শিশু মঙ্গল) হাসপাতালের ইনএনটি (নাক, কান, গলা) বিভাগের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র পরিচয়। জুনিয়র ডাক্তারদের সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’জনেই দুর্বল হয়ে পড়েছেন। মাঝেমধ্যেই ‘ক্র্যাম্প’ ধরছে পেশিতে। যন্ত্রণা হচ্ছে শরীরে। তবু মনের জোরে আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাইছেন তাঁরা। ১৫ অক্টোবর থেকে অনশন করছেন অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেল্‌থের পভার্টি মেডিসিনের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া রুমেলিকা এবং মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র স্পন্দন। তাঁদের শরীরের অবস্থাও একই রকম। ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ছেন তাঁরা।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে গত ১৪ অক্টোবর থেকে অনশন করছেন জুনিয়র ডাক্তার সন্দীপ। আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে। শনিবার সকালে তাঁর তলপেটে ব্যথা শুরু হলে পরীক্ষা করাতে তাঁকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ইউএসজিতে লিভারের সমস্যা ধরা পড়েছে৷ মূত্রে কিটোন বডিও পাওয়া গিয়েছে। যদিও অনশন মঞ্চ ছাড়তে নারাজ সন্দীপ।

১০ দফা দাবিতে গত ৫ অক্টোবর থেকে ‘আমরণ অনশন’ করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। অনশনমঞ্চে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন জুনিয়র ডাক্তার তনয়া পাঁজা, সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, পুলস্ত্য আচার্য, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অলোক বর্মা। এখনও অনশন করছেন আরও আট জুনিয়র ডাক্তার। প্রতি দিন শরীর ভেঙে পড়ছে তাঁদের। দুর্বল হয়ে পড়ছেন তাঁরা। মাথা ঘুরছে। আপাতত দিনে দু’বার করে অনশনকারীদের রক্তচাপ, নাড়ির গতি, ক্যাপিলারি ব্লাড গ্লুকোজ (সিবিজি) মাপা হচ্ছে। শনিবারও অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট যথেষ্টই উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন
Advertisement