মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
রাত্রিবাসের উপযোগী করে তুলতে ঢেলে সাজানো হয়েছে সার্কিট হাউস। বসানো হয়েছে গরম জলের গিজ়ার। যাত্রাপথে যানজট এড়াতে দুই পুলিশ জেলার কর্তারা ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে রাখতে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। অন্য জেলা থেকেও নিয়ে আসা হয়েছে অতিরিক্ত বাহিনী। ছুটি বাতিল করা হয়েছে সরকারি আধিকারিকদের। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হচ্ছে সভাস্থল। জরুরি পরিস্থিতির জন্য তৈরি হয়েছে হেলিপ্যাড। এই জোরকদমে প্রস্তুতির মধ্যেও ধোঁয়াশায় রয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা! প্রশ্ন, বৃথা যাবে না তো এই আয়োজন? কারণ, নদিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভার জন্য উপর মহল থেকে শান্তিপুরের অদ্বৈত মহাপ্রভু ক্রীড়াঙ্গনকে বাছা হলেও শেষমেশ সেখানেই সভা হবে কি না, তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে দাবি, শেষ মুহূর্তে সভাস্থল বদলে যেতে পারে।
জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ বলেন, ‘‘আগামী পয়লা ফেব্রুয়ারি শান্তিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর একটি সভার ব্যাপারে জানানো হয়েছে। আমরা প্রশাসনিক ভাবে সব দিক থেকে প্রস্তুত থাকছি। তবে রাজ্য প্রশাসন ও স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শেষমেশ জানানো হবে, কোথায় ও কখন সভা হবে।’’
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আগামী ৩১ জানুয়ারি বুধবার বহরমপুর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর সভা রয়েছে। বহরমপুরের সভা শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছনোর কথা কৃষ্ণনগরে। সেখানে সার্কিট হাউসে তাঁর রাত্রিবাস করার কথা। তার পর ১ ফেব্রুয়ারি নদিয়ায় প্রশাসনিক সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। এখনও পর্যন্ত যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাতে সভা হওয়ার কথা অদ্বৈত মহাপ্রভু ক্রীড়াঙ্গনেই। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সভাস্থল বদলে যেতে পারে বলেও উপরমহল থেকে জানানো হয়েছে। তেমনটাই দাবি প্রশাসনিক সূত্রের।
এই পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য প্রশাসনকে বিঁধতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। নদিয়ার রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগান্নাথ সরকার বলেন, ‘‘রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তির সভা ঘিরে এত লুকোচুরি নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়। এর আগে কখনও এমন পরিস্থিতি দেখিনি।’’ পাল্টা রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলীয় নির্দেশিকার পাশাপাশি দলের বিধায়কেরা তাঁদের উন্নয়নের খতিয়ান ও প্রস্তাব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সভায় যোগ দেবেন। আমাদের আশা, জেলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ভাল কিছু ঘোষণা করবেন।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, নদিয়ায় প্রশাসনিক সভার পাশাপাশি জেলা দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠক করতে পারেন মমতা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি কেমন চলছে, তা খোঁজখবর নিতে পারেন তিনি। পাশাপাশি গোষ্ঠীকোন্দল নিয়েও দলীয় নেতাদের কড়া বার্তা দিতে পারেন।