সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
অবশেষে মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত জোড়া বিলে সম্মতি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মঙ্গলবার রাজভবন থেকে ফাইলে স্বাক্ষর করে পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারের সদর দফতর নবান্নে। পুজোর মুখে সোমবার বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল বিধানসভায়। জল্পনা ছিল, মন্ত্রী এবং বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সোমবার বিলটি পেশও হয়েছিল। কিন্তু আলোচনা হয়নি। শেষ পর্যন্ত শোকপ্রস্তাব পাঠ করেই মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, যে কোনও লেনদেন সংক্রান্ত আর্থিক বিল বিধানসভায় পাশ করতে গেলে রাজ্যপালের অনুমোদন আবশ্যিক বিষয়। এ ক্ষেত্রে যে দুটি বিল পাশ করাতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার, তার কোনওটিতেই অনুমোদন দেননি রাজ্যপাল। তাই শোকপ্রস্তাবের পর অধিবেশন মুলতুবি হয়ে গেলে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে এবং বাইরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা। তাঁদের অভিযোগ, অনৈতিক ভাবে রাজ্য সরকার সেই বিল বিধানসভায় পেশ করেছে। কিন্তু সেই দাবি মানতে চাননি অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পিকার দাবি করেছিলেন, বিল পাশ হওয়ার আগে রাজ্যপাল অনুমোদন দিলেই চলবে। এ ক্ষেত্রে বিল পেশ এবং তার উপর আলোচনার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। কিন্তু যে হেতু প্রাক্তন বিধায়ক মারা গিয়েছেন, তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব হওয়াতেই অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে। দুটি বিল নিয়ে আলোচনা হবে ৪ ডিসেম্বর।
সোমবার দিনভর এই সংক্রান্ত বিষয়ে বিবাদ-বিতর্ক চললেও, মঙ্গলবার সকালেই এই দুটি বিলে ছাড় দিয়েছেন রাজ্যপাল। তবে এক দিন দেরি করে ছাড় দেওয়ায় মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়াটিও বেশ কিছু দিন পিছিয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ দুটি সংশোধনী বিল পেশ হয়ে আলোচনার পর পাশ হয়ে তা আবারও রাজ্যপালের কাছে স্বাক্ষরের জন্য যাবে। আর অধিবেশনের পরবর্তী দিন হিসেবে ৪ ডিসেম্বর ঘোষণা করে দিয়েছেন স্পিকার। তাই গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে নতুন বছরের জানুয়ারি মাস হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে রাজ্যপাল বিল নিয়ে আলোচনা এবং পাশের অনুমতি দেওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে বিধানসভা থেকে নবান্নে। কারণ ৭ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর রাজভবন নবান্নের টানাপড়েনে বিষয়টি আটকে গিয়েছিল। মঙ্গলবার ফাইল ছাড়া হলেও, বুধবার থেকে পুজোর ছুটি শুরু হয়ে যাচ্ছে সরকারি প্রশাসনে। তাই রাজ্যপালের অনুমোদন পেয়েও ফাইলটিকে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।