বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল ছবি।
সন্দেশখালির ঘটনায় সরাসরি রাজ্য প্রশাসনকেই দায়ী করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সরকারের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রীতিমতো ‘ফল ভুগতে হবে’ বলে হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন তিনি। গোটা ঘটনাটিকে উদ্বেগজনক বলে আখ্যা দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, “সরকারের উচিত গণতন্ত্রে এই ধরনের বর্বরতাকে রোখা। কিন্তু সরকার যদি তার প্রাথমিক দায়িত্ব পালন করতে না পারে, তবে দেশের সংবিধান উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।” সংবিধানের অবমাননা করা হলে রাজ্যপাল হিসাবে তিনি উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন বলেও জানান বোস।
ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই সন্দেশখালির ঘটনা প্রসঙ্গে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন যে, “রাজ্যপাল কেন ঘোষণা করছেন না রাজ্যে সাংবিধানিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে?” তার পরে পরেই মুখ খুলে রাজ্য সরকারকে কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যের মানুষদের নিয়ে বাহুবলী শক্তিকে খেলা করতে দেবেন না বলেও জানিয়ে দেন রাজ্যপাল। এর পাশাপাশি সরকারের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “সরকারের দায়িত্ব এই ধরনের হিংসাকে রোখা। সরকারকে বাস্তব পরিস্থিতির দিকে নজর দিতে হবে। না হলে ফল ভোগার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
শুক্রবার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দিতে গিয়ে স্থানীয়দের রোষের মুখে পড়ে ইডি। মাথা ফাটে এক ইডি আধিকারিকের। মারমুখী জনতার চাপে পিছু হটতে হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির আধিকারিকদের। সন্দেশখালির বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। বেশ কয়েকটি রাস্তায় কাঠের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করা হয়।
রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় তদন্তের সূত্রে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। তবে সেই বাড়ি তালাবন্ধ ছিল। অনেক ক্ষণ ডাকাডাকির পরেও কারও সাড়া মেলেনি। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর সেই বাড়ির তালা ভাঙার চেষ্টা করেন ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেই সময়েই বেশ কয়েক জন স্থানীয় ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। তাঁরা নিজেদের তৃণমূল নেতার অনুগামী পরিচয় দিয়ে ইডি আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জনওয়ানদেরও ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্থানীয়দের একাংশের বিরুদ্ধে। তার পর ইডি আধিকারিকেরা ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে যান। তবে তার পরেও থামেনি বিক্ষুব্ধ জনতা। ইট-পাটকেল হাতে রাস্তায় নামেন বেশ কয়েক জন। বেশ কয়েকটি রাস্তা অবরোধ করা হয়।