CV Ananda Bose

অখিলের পদত্যাগপত্র গ্রহণ রাজভবনের, দু’সপ্তাহ পর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ফাইলে অনুমোদন বোসের

কলকাতায় ফিরেই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন বোস। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ দিনক্ষণ কবে নির্ধারিত হয় সে দিকেই তাকিয়ে নবান্নের শীর্ষকর্তারা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৪ ২০:১১
Governor CV Ananda Bose have approved the file of cabinet expansion

(বাঁ দিকে) অখিল গিরি। সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।

দু’সপ্তাহ পর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ফাইলে স্বাক্ষর করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মঙ্গলবার তাঁর স্বাক্ষরের পর সেই ফাইল নবান্নে পাঠানো হয়েছে বলে রাজভবন সূত্রে খবর। সোমবার মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন কারামন্ত্রী অখিল গিরি। সেই ফাইল অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল রাজভবনে। নবান্নের পাঠানো সেই পদত্যাগপত্রও অনুমোদন করেছেন রাজ্যপাল।

Advertisement

নতুন বিধায়কদের শপথগ্রহণ ঘিরে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল রাজভবন ও নবান্নের মধ্যে। প্রথমে বরাহনগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভগবানগোলার বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকারের শপথগ্রহণ নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়েছিল বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল বোসের মধ্যে। সে যাত্রায় প্রথমে রাজ্যপাল নিজেই রাজভবনে বিধায়কদের শপথগ্রহণ করাতে চেয়েছিলেন। বিধায়কদ্বয় ও রাজ্য সরকারের আপত্তিতে শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাল শপথগ্রহণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিশেষ অধিবেশন ডেকে ওই বিধায়কদের শপথগ্রহণের বন্দোবস্ত করা হয়। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে ডেপুটি স্পিকার শপথবাক্য পাঠ না করাতে চাইলে স্পিকারই বিমান তাঁদের শপথগ্রহণ করান।

এর পর বাগদা, রায়গঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ ও মানিকতলা উপনির্বাচনের ফলাফলে জয়ী হয় তৃণমূল। সেই বিধায়কদের শপথ নিয়েও দড়ি টানাটানি হয় নবান্ন-রাজভবনের। এ ক্ষেত্রে আবার সরাসরি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সদ্যসমাপ্ত বিধানসভার অধিবেশনেই চার জনের শপথ করিয়ে দেন। যদিও তার আগে রাজভবনকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে বলেছিল রাজ্য। এই দু’টি ঘটনায় রাজভবন ও নবান্নের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছিল। এরই মধ্যে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ফাইল পৌঁছয় রাজভবনে। কিন্তু রাজ্যপাল তাতে সায় দেননি বলেই অভিযোগ। সেই সময় নিজের রাজ্য কেরল গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ওয়েনাড়ের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ায় তিনি কলকাতার রাজভবনে ফিরতে পারেননি বলেই জানাচ্ছে রাজভবনের একটি সূত্র। তাই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ফাইলে অনুমোদন দিতে দেরি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, শেষ বার রাজ্য মন্ত্রিসভা সম্প্রসারিত হয়েছিল ২০২২ সালের অগস্ট মাসে। সে বার আট জন নতুন বিধায়ক মন্ত্রী হয়েছিলেন। অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গণেশন তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন।

কলকাতায় ফিরেই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন বোস। এর পর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ দিনক্ষণ কবে নির্ধারিত হয় সে দিকেই তাকিয়ে নবান্নের শীর্ষকর্তারা। কারণ, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জেলবন্দি হওয়ায় তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হয়েছে। সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ব্যারাকপুর থেকে জয়ী হয়ে সাংসদ হয়েছেন। আর সোমবার দলীয় নির্দেশে ইস্তফা দিয়েছেন অখিল। এই তিন মন্ত্রীর বদলে, তাই তিন জন বিধায়কের মন্ত্রিসভায় সংযোজন পাকা বলে মনে করা হচ্ছে। এই তালিকায় এক বিধায়কের নাম শোনা যাচ্ছে যিনি লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করে পরাজিত হয়েছেন। উত্তরবঙ্গ থেকেও এক জনকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া হতে পারে। লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে সে ভাবে প্রভাব ফেলতে না পারায় শাসকদল এই কৌশল নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আবার ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে মতুয়া সম্প্রদায়ের এক জনকে মন্ত্রিসভায় আনা হতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। সে ক্ষেত্রে সদ্যসমাপ্ত উপনির্বাচনে জয়ী দু’জন মতুয়া বিধায়কের মধ্যে এক জনকে বেছে নেওয়া হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। সবচেয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে সেচ দফতরকে ঘিরে। ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থের হাতে থাকা এই গুরুদায়িত্ব কার হাতে যায় সে দিকেই নজর রাজ্য প্রশাসনের বড় কর্তাদের। নবান্ন সূত্রে খবর, এই দায়িত্ব পেতে পারেন রাজ্যের এক প্রবীণ মন্ত্রী। তবে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই দফতরের অদলবদল নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা।

আরও পড়ুন
Advertisement