WB Tab Scam

ট্যাবের টাকা চুরি করতে এজেন্টও নিয়োগ করত প্রতারকেরা! ৭০ লক্ষাধিক টাকা আটক করল পুলিশ

এখনও পর্যন্ত ট্যাব-কাণ্ডে ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ১৩৪২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আটক (ফ্রিজ়) করা হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৯
Fraudsters used to recruit agents in tab cases to collect bank accounts

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জোগাড় করতে এজেন্ট নিয়োগ করত প্রতারকেরা! ট্যাব-কাণ্ডে এমনই দাবি করল পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারকেরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর জোগাড় করতে ভরসা করত এজেন্টদের উপর। তাঁরাই বিভিন্ন লোকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান দিতেন। নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতেই ‘চুক্তি’ হত দু’পক্ষের। তার পরই সেই অ্যাকাউন্টগুলির সঙ্গে পাল্টে দেওয়া হত পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট! টাকা ঢুকলেই তা তুলে নিত প্রতারকেরা।

Advertisement

একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াশোনার সুবিধার্থে রাজ্য সরকার ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে এককালীন ১০ হাজার টাকা দেয়। অভিযোগ, সেই টাকা ঢোকেনি বেশ কয়েক জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে। কোথাও কোথাও আবার এক জনের টাকা, অন্য জনের অ্যাকাউন্টে ঢোকার অভিযোগও উঠেছে। রাজ্য জুড়ে দু’হাজারেরও বেশি পড়ুয়া নানা ভাবে প্রতারিত হয়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ মেলায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। তদন্তকারীদের দাবি, পড়ুয়াদের টাকা হাতানোর নেপথ্যে বড় ষড়যন্ত্রের হদিস মিলেছে। তদন্তে নেমে বেশ কয়েক জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ট্যাব-কাণ্ডে ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ১৩৪২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আটক (ফ্রিজ়) করা হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। আটক করা হয়েছে ৭০ লক্ষ টাকার বেশি। এর মধ্যে কলকাতা পুলিশই ১২২টা অ্যাকাউন্ট আটক করেছে।

তদন্তকারী সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়াদের টাকা হাতাতে অন্য অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হত। সেই অ্যাকাউন্ট জোগাড় করতে এজেন্ট নিয়োগ করত প্রতারকেরা। এক হাজার টাকা কমিশনের ভিত্তিতে এজেন্ট নিয়োগ হত। আর যাঁদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার হত, তাঁরা নূন্যতম ৩০০ টাকা পেয়েছেন।

ট্যাব-কাণ্ডে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি থেকে রবীন্দ্রপ্রসাদ সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বর্ধমান থানার পুলিশ। তিনি কিষাণগঞ্জের বাসিন্দা। তদন্তে জানা গিয়েছে, রবীন্দ্রপ্রসাদ ট্যাব-কাণ্ডে এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন। তদন্তকারীদের তিনি জানিয়েছেন, তাঁর জেরক্সের দোকানে কমিশনের প্রলোভন দেখিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জোগাড় করে দিতে বলেন কয়েক জন। কমিশনের লোভে রাজিও হন তিনি। কিষাণগঞ্জের ১০ থেকে ১২ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জোগাড় করে প্রতারকদের দিয়েছিলেন রবীন্দ্রপ্রসাদ।

বর্ধমান সাইবার থানায় গত ৩১ অক্টোবর ট্যাব নিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। পাওয়া যায় শিলিগুড়ি-যোগ। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার পুলিশের একটি দল পৌঁছে গিয়েছিল শিলিগুড়িতে। প্রধাননগর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে দেবীডাঙা থেকে গ্রেফতার করা হয় রবীন্দ্রপ্রসাদকে।

ট্যাব-কাণ্ডে বার বার উঠে এসেছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার নাম। একাধিক অভিযুক্তকে সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, গোটা চক্রের মূল রয়েছে চোপড়াতেই। সেখান থেকেই ট্যাবের টাকা হাতানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে শিলিগুড়ি, মালদহ থেকেও একাধিক গ্রেফতার হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক স্কুলশিক্ষক, কৃষক, চা-শ্রমিক।

আরও পড়ুন
Advertisement