Maha Kumbh Stampede 2025

আমাদের মাড়িয়ে গেল ওরা, চোখের সামনে মরল বোনটা! কুম্ভ থেকে একা ফিরলেন গল্ফগ্রিনের পুষ্প

বৃহস্পতিবারই কলকাতায় ফিরেছেন গল্ফগ্রিনের মৃত বৃদ্ধার দিদি পুষ্প সাহা। বিপর্যয়ের মুহূর্তের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ঘটনার জন্য দায়ী করেন উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:২৫
(বাঁ দিকে) মহাকুম্ভে মৃত গল্ফগ্রিনের বৃদ্ধা বাসন্তী পোদ্দার। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফিরে তাঁর দিদি পুষ্প সাহা (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) মহাকুম্ভে মৃত গল্ফগ্রিনের বৃদ্ধা বাসন্তী পোদ্দার। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফিরে তাঁর দিদি পুষ্প সাহা (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

চোখের সামনে বোনের মৃত্যু দেখেছেন। ঘোর কাটছে না গল্ফগ্রিনের মৃত বাসন্তী পোদ্দারের দিদি পুষ্প সাহার। এখনও সেই মুহূর্তের কথা মনে করে শিউরে উঠছেন তিনি। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধা। মহাকুম্ভের ঘটনার জন্য উত্তরপ্রদেশের পুলিশ-প্রশাসনকেই দায়ী করছেন তিনি।

Advertisement

গল্ফগ্রিনের বাসিন্দা ৬০ বছরের বাসন্তী মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার এমআর বাঙুর হাসপাতালে তাঁর দেহ নিয়ে আসা হয়। পুত্র, কন্যা এবং দিদির সঙ্গে তিনি কুম্ভে পুণ্যস্নান করতে গিয়েছিলেন। মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে ত্রিবেণী সঙ্গমে পবিত্র ডুব দেওয়ার আগেই বিপর্যয়ের বলি হন বাসন্তী। দুর্ঘটনার মুহূর্তের বর্ণনা দিতে দিতে চোখ ভিজে আসে দিদি পুষ্পর। তিনি বলেন, ‘‘সকলের সঙ্গে আমরাও স্নানের জন্য লাইন দিয়েছিলাম। হঠাৎ পিছন থেকে এমন জোরে ধাক্কা দিল, আমরা সবাই পড়ে গেলাম। কেউ আমাদের টেনে তোলেনি। বরং আমাদের মাড়িয়ে মাড়িয়ে সকলে চলে যাচ্ছিল। আমরা লোকজনের হাত-পা, জামাকাপড় টেনে ওঠার অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি।’’

বোনের কথা ভেবে কান্নায় ভেঙে পড়েন পুষ্প। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক পরে ভিড়ের মধ্যে এক জন আমাকে টেনে তুলল। কিন্তু আমার বোনটাকে কেউ তুলতে পারেনি। তখনই ওর প্রাণ বেরিয়ে গিয়েছে। আমার চোখের সামনে আমার বোনটা চলে গেল।’’

বিপর্যয়ের মুহূর্তের বর্ণনা করতে গিয়ে চোখেমুখে এখনও আতঙ্ক বৃদ্ধার। তিনি বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে যারা ছিল, তারাও পড়ে গিয়েছিল। প্রায় আধঘণ্টা ধরে আমরা পড়েই ছিলাম মাটিতে। অনেক পরে আমাদের তোলা হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন কেউ ছিল না। আমাকে তুলে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে ওষুধ দিল। পরে পুলিশ বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়।’’

মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। আহতের সংখ্যা ৬০-এর বেশি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। বুধবার সকালের দিকে দীর্ঘ ক্ষণ স্নানের প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়েছিল ত্রিবেণী সঙ্গমে। পরে দুপুরের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন