প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। — ফাইল চিত্র।
রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হস্তাক্ষর পরীক্ষার অনুমতি দিল আদালত। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন তিনি কন্যাকে একটি চিঠি লিখেছিলেন বলে ইডি সূত্রে দাবি। সেই চিঠি নিরাপত্তারক্ষীদের মারফত ইডি-র হাতে পৌঁছোয়। ইডি সূত্রে খবর, টাকার লেনদেন প্রসঙ্গে কয়েকটি কথা কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিককে চিঠিতে জানিয়েছিলেন বালু। চিঠিতে একই মামলায় ধৃত বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য ওরফে ‘ডাকু’র নামও ছিল বলে জানা গিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এর আগেও সেই চিঠির সঙ্গে মেলাতে বালুর হস্তাক্ষর পরীক্ষা করতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এ বার সেই আবেদনেই সম্মতি দিল আদালত।
গত বছর বালুর লেখা ওই চিঠির সূত্রে রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলেছে বলে দাবি করেছিল ইডি। তদন্তকারী সংস্থার দাবি ছিল, জ্যোতিপ্রিয়ের লেখা চিঠিতে একাধিক প্রভাবশালীর নামের পাশাপাশি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও রয়েছে। ওই চিঠির সূত্রে তদন্ত বেশ কিছু দূর এগিয়েছে বলেও আদালতে দাবি করেছিলেন ইডির আধিকারিকেরা। আদালতে ইডি-র আইনজীবীরা দাবি করেন, রেশন বণ্টন দুর্নীতির কালো টাকা কী ভাবে কোথায় পাচার ও আদায় করতে হবে, সেই বিষয়ে জ্যোতিপ্রিয়ের লেখা পরামর্শও নাকি ছিল সেই চিঠিতে। এর পরেই বালুর হস্তাক্ষর পরীক্ষা করতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। চলতি মাসের শুরুতে সেই আবেদনেই সম্মতি দিয়েছে আদালত। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, চিঠির হাতের লেখার সঙ্গে মেলানোর জন্য শীঘ্রই বালুর হস্তাক্ষরের নমুনা এবং স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে হবে ইডিকে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময়ে জ্যোতিপ্রিয় তাঁর মেয়ে প্রিয়দর্শিনীর হাতে ওই চিঠিটি দেন বলে দাবি। হাসপাতালে পাহারারত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মাধ্যমে চিঠি চালাচালির কথা জানতে পারে ইডি। সিআরপিএফের কর্মীরাই ওই চিঠি বাজেয়াপ্ত করে ইডির হাতে তুলে দেন। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, হাসপাতালে কী ভাবে কাগজ, কলম পেলেন বালু। ইডির দাবি, চিঠি উদ্ধারের পরেই জ্যোতিপ্রিয়কে জেরা করা হয়েছিল। সে সময় তিনি কন্যাকে লেখা চিঠির কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তিনি তা অস্বীকারও করতে পারেন। সেই কারণেই হস্তাক্ষর পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার কথা ভাবছে ইডি।