Ration Distribution Case

কোথায় গিয়েছে দুর্নীতির টাকা, বাকিবুরের বয়ান ধরে মন্ত্রীকে জেরা ইডির, কী উত্তর জ্যোতিপ্রিয়ের?

ইডি সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে তারা ঠিক করেছিল যে, বালু এবং বাকিবুরকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কিন্তু মন্ত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা সফল হয়নি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩ ১২:১৮
ED sources said they will interrogate Jyotipriya Mallick as per statement of Bakibur Rahaman

বাকিবুর রহমান (বাঁ দিকে) এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

রেশন বণ্টন মামলায় ‘দুর্নীতি’র টাকা কোথায় গিয়েছে, কারা কারা ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে যুক্ত, এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই বালু-সঙ্গী বাকিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বয়ান নথিবদ্ধ করেছে ইডি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, এ বার সেই বয়ানের ভিত্তিতেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। মন্ত্রীর সঙ্গে পেশায় ব্যবসায়ী বাকিবুরের ‘ঘনিষ্ঠতা’র প্রমাণ আগেই পেয়েছে ইডি। বস্তত, বাকিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই মামলায় মন্ত্রীর যোগসাজসের প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি ইডির। তার পরেই জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে তল্লাশি এবং পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

গত ১৪ অক্টোবর রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় বাকিবুরকে। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এই মামলাতেই গ্রেফতার হন জ্যোতিপ্রিয়। মন্ত্রীর গ্রেফতারির সময় ইডি হেফাজতেই ছিলেন বাকিবুর। ইডি সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে তারা ঠিক করেছিল যে, বালু এবং বাকিবুরকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কিন্তু মন্ত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় ইডির প্রাথমিক পরিকল্পনা সফল হয়নি। ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের পর বাকিবুর এখন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। অন্য দিকে, কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর এখন ইডি হেফাজতে রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়।

মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গত ২৩ অক্টোবর ইডির সামনে দেওয়া বাকিবুরের একটি বয়ানকেই হাতিয়ার করছেন তদন্তকারীরা। বাকিবুরের সংস্থার সঙ্গে মন্ত্রীর পরিবারের যোগাযোগের বিষয়টি আগেই জানতে পেরেছিল ইডি। তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পারেন যে, মোট তিনটি সংস্থায় শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে মোটা টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন বাকিবুর। বাকিবুর অবশ্য জেরার মুখে জানান, জ্যোতিপ্রিয়ের অনুরোধে তিনি ওই বিপুল পরিমাণ টাকা ধার হিসাবে দিয়েছিলেন। এই বয়ানকে সামনে রেখেই বক্তব্যের সত্যাসত্য যাচাই করতে মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে ইডি।

তা ছাড়াও রেশনে খাদ্যশস্যের পরিমাণ কমানো নিয়ে বাকিবুর যে বয়ান ইডিকে দিয়েছেন, তার ভিত্তিতেও মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ভাবা হচ্ছে। ইডি সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত বিবিধ প্রশ্নে খুব ‘সাবধানী’ উত্তর দিয়েছেন মন্ত্রী।

সাধারণ মিল মালিক এবং ব্যবসায়ী হলেও খাদ্য দফতরে অবাধ যাতায়াত ছিল বাকিবুরের। এর আগে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছিল যে, বাকিবুরের সঙ্গে তাঁর কর্মীদের যে হোয়াট্‌সঅ্যাপ চ্যাট চালাচালি হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা জানতে পারেন যে, দু’দফায় জ্যোতিপ্রিয়কে মোট ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। বাকিবুরের তরফে জনৈক ‘এমআইসি’কে টাকা দেওয়ার তথ্য আসে তদন্তকারীদের হাতে। ইডির দাবি, এই ‘এমআইসি’-র অর্থ ‘মিনিস্টার ইন চার্জ’ অর্থাৎ ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। তিনি আর কেউ নন, খোদ জ্যোতিপ্রিয়। বাকিবুর আর বালুকে মুখোমুখি বসাতে না পারলেও এ বার প্রথম জনের বয়ানের সূত্রে দ্বিতীয় জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি।

আরও পড়ুন
Advertisement