অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত মামলায় নতুন মোড়। মঙ্গলবার আদালতে ইডি জানিয়ে দিল, এই দুর্নীতির সঙ্গে যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ থাকা সংস্থা ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার অধীনে থাকা আটটি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।বিচারপতি অমৃতা সিংহকে ইডি জানিয়েছে ওই সম্পত্তির মূল্য সাড়ে সাত কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার সিইও পদে রয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে গ্রেফতার করে ইডি। যাঁকে ‘কালীঘাটের কাকু’ বলে উল্লেখ করেছিলেন শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ধৃত তাপস মণ্ডল।
এই মামলার প্রেক্ষিতেই অভিষেকের আয়ের উৎস জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ। অল্প কথায় মুখবন্ধ খামে জবাব দিতে বলা হয়েছিল। গত ১৪ ডিসেম্বর ইডির তরফে সেই জবাব জমা পড়ে হাই কোর্টে। অভিষেকের সংস্থা লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য অনেক আগেই ইডিকে বিশদে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ। লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার ছ’জন ডিরেক্টরের নাম, তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ, সংস্থার লেনদেন, তার মূল্য, এই সংস্থার কারা উপভোক্তা, তাঁদের নাম, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সংস্থার রোজকার কাজ কে দেখতেন, সিইও অভিষেকের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, তাঁর মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, সংস্থার সব কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, কারা, কবে সংস্থায় যোগ দিয়েছেন, কেন সংস্থার ঠিকানা পরিবর্তন এবং তদন্ত নিয়ে কার কাছে ইডি সাহায্য চায়, তা জানাতে বলা হয়েছিল হাই কোর্টে। এ বিষয়ে অভিষেকের কাছে নথি চাওয়া হলে কিছু দিন আগেই ইডিকে তাঁর সংস্থা সংক্রান্ত তথ্য জমা দিয়ে এসেছিলেন অভিষেক। তার প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার বিষয়টি আদালতে জানায় ইডি। তারা যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের উপরে নজরদারি চালাচ্ছে এবং লেনদেন বন্ধ রাখার বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে দিয়েছে, তা জানায় ইডি।
প্রসঙ্গত, এই মামলার তদন্ত ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ করতে বলেছিল আদালত। ৩১ ডিসেম্বর সেই সময়সীমা পার হয়ে গেলেও ইডি মঙ্গলবার আদালতে জানিয়েছে, অনেক তথ্য হাতে এসে যাওয়ায় এখনও তদন্ত শেষ করা যায়নি। আদালতের কাছে আরও কিছুটা সময় চান ইডির আইনজীবী। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি বুধবারেই ইডির জয়েন্ট ডিরেক্টরকে আদালতে হাজিরা দিতে বলেছেন।
এই মামলাতেই অন্য দাবি করেছে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে কারা এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন, তার একটি তালিকাও আদালতে পেশ করেছে সিবিআই। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামটি হল তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক অদিতি মুন্সির স্বামী দেবরাজ চক্রবর্তী। এ ছাড়াও মহিদুল আনসারি, জাফিকুল ইসলাম, সজল কর, বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত এবং সৌরভ ঘোষের নাম রয়েছে।