Abhishek Banerjee

‘সম্পর্কহীন বিষয়ে’ কেন তলব? ইডিকে চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা চাইলেন অভিষেক, জানালেন ‘ব্যস্ততা’র কথাও

মঙ্গলবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছিল ইডি। হাজিরা না দেওয়ার কথা আগেই সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন অভিষেক। এ বার ইডিকে চিঠি দিলেন তৃণমূল সাংসদ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ ১৩:৫১
photo of abhishek banerjee.

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

তলব পেয়ে মঙ্গলবার ইডি দফতরে না যাওয়ার কথা আগেই সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ইডিকে চিঠি দিয়ে এ বার সে কথা জানালেন তৃণমূল সাংসদ। পাশাপাশি, ঠিক কোন কারণে তাঁকে এই তদন্তে তলব করা হল, সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাইলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

Advertisement

মঙ্গলবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে (যেখানে ইডির দফতর রয়েছে) তলব করা হয়েছিল অভিষেককে। গত ৮ জুন এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে অভিষেক জানিয়েছিলেন, তিনি ইডি দফতরে হাজিরা দেবেন না। মঙ্গলবার ইডিকে ১৫ পাতার চিঠি পাঠিয়ে সে কথা এ বার আনুষ্ঠানিক ভাবে জানালেন অভিষেক। চিঠিতে অভিষেক লিখেছেন যে, ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে তিনি কলকাতার বাইরে রয়েছেন। আগামী ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট। এই কারণে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ইডির তলব প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে ‘তৃণমূলের সেনাপতি’ বলেছিলেন, ‘‘আমার সৌজন্য আমার দুর্বলতা নয়। আপনি যখন ডাকবেন, তখনই আমাকে যেতে হবে, তা নয়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ইডির দফতরে গিয়ে ১০-১২ ঘণ্টা অপচয় করার মতো সময় আমার হাতে নেই। ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট। তার পরে আপনারা যখন ডাকবেন, তখনই যাব।’’ ওই দিনই কয়লা পাচার মামলায় অভিষেক-পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রায় ৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। সেই জিজ্ঞাসাবাদ সেরে রুজিরার বেরোনোর ১৫ মিনিটের মধ্যেই তাঁকে তলব করা হয় বলে দাবি করেছিলেন অভিষেক।

photo of Abhishek Banerjee

ইডিকে পাঠানো অভিষেকের চিঠি। —নিজস্ব চিত্র।

তাঁকে কেন এই তদন্তে ডাকা হল, সে ব্যাপারে ইডির কাছে ব্যাখ্যাও চেয়েছেন অভিষেক। তদন্তে তাঁর কাছে যে সব নথি চাওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে গত ২৯ মার্চ একটি সভায় তাঁর বক্তব্যের কোনও সম্পর্ক নেই বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন অভিষেক। এই সংক্রান্ত নথি ইতিমধ্যেই সরকারি দফতরে রয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন অভিষেক। গত ২৯ মার্চ ধর্মতলায় শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর পরই রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষ দাবি করেন যে, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠিও দেন কুন্তল। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠান কলকাতার হেস্টিংস থানাতেও। তার পর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, প্রয়োজনে সিবিআই বা ইডি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সেই একই নির্দেশ বহাল রাখেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্‌‌হাও। তার পরেই অভিষেককে গত ২০ মে ডেকেছিল সিবিআই। সে দিন সাড়ে ৯ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিষেককে। তার পর এই তদন্তে তৃণমূল নেতাকে তলব করে ইডি।

মঙ্গলবার হাজিরা দিলেন না অভিষেক। তবে তদন্তে সহযোগিতার কথা বলেছেন সাংসদ। অভিষেকের এই চিঠির পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইডির এক আধিকারিক। ইডি সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাউকে ডাকা হলে তিনি যদি হাজিরা না দেন, তা হলে তাঁকে দ্বিতীয় বার তলব করার বিষয়টি থাকেই। অভিষেকের ক্ষেত্রেও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে আবার কবে তলব করা হবে বা কত দিন পর আবার ডাকা হতে পারে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন
Advertisement