ED describes Sandeshkhali incident

বাইরে যখন দরজা ভাঙছে ইডি, তখন ভিতরেই ছিলেন শাহজাহান, দিন শেষে ইডি জানাল ঠিক কী ঘটেছিল

সকালে সন্দেশখালির সরবেরিয়া গ্রামে তৃণমূল নেতা শাহজাহানের তল্লাটে আক্রান্ত হওয়ার পর সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি ইডি। এই প্রথম সরকারি ভাবে মুখ খুলল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:০৯

গ্রাফিক— সনৎ সিংহ

সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়ির দরজায় যখন কড়া নাড়ছে ইডি, তখন বাড়ির ভিতরেই ছিলেন তৃণমূল নেতা। কিন্তু তা সত্ত্বেও দরজা খোলেননি তিনি। বরং ভিতরে থেকে গ্রামবাসীদের উসকানি দিয়েছেন। যাতে তাঁরা ইডিকে আক্রমণ করেন, ভয় দেখিয়ে এলাকাছাড়া করেন। শুক্রবার রাতে একটি প্রেস বিবৃতি দিয়ে এমনই অভিযোগ করল ইডি।

Advertisement

সকালে সন্দেশখালির সরবেরিয়া গ্রামে তৃণমূল নেতা শাহজাহানের তল্লাটে আক্রান্ত হওয়ার পর সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি ইডি। এই প্রথম সরকারি ভাবে মুখ খুলল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

শুক্রবার রাত পৌনে ৯টা নাগাদ প্রথমে এক্স হ্যান্ডলে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট করে ইডি। একই সময়ে প্রকাশ করা হয় একটি প্রেস বিবৃতিও। ইডি তাতে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, শুক্রবার সন্দেশখালিতে আসলে কী হয়েছিল?

ইডি জানিয়েছে, রেশন দুর্নীতির তদন্ত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সহযোগীদের খোঁজ করতে গিয়েই উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল নেতা শাহজাহানের খোঁজ পায় তারা। সেই সূত্রেই শুক্রবার সরবেরিয়ায় শাহজাহানের গ্রামে গিয়েছিল তারা। দুটি জায়গায় তল্লাশি চালানোর কথা ছিল। তার মধ্যে একটি ছিল তৃণমূল নেতার বাড়ি। কিন্তু সেই বাড়িতে ঢুকতেই পারেনি ইডি।

ইডির কথায়, বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। তাতে করা নেড়ে, ধাক্কা দিয়ে, বাড়ির সামনে বার বার শাহজাহানের নাম ধরে ডেকেও সাড়া পাওয়া যায়নি। অথচ সেই সময় শাহজাহানের মোবাইলের অবস্থান পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি নিজের বাড়িতেই রয়েছেন।

ইডি জানিয়েছে, কিছুটা নিরুপায় হয়েই এর পর কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্যে শাহজাহানের বাড়ির দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন অফিসারেরা। কিন্তু ঠিক সেই সময়েই তাঁরা আবিষ্কার করেন প্রায় ৮০০-১০০০ সশস্ত্র গ্রামবাসী ঘিরে ধরেছে তাঁদের। এঁদের কারও হাতে লাঠি, কারও হাতে পাথর কারও হাতে ইট। সে সব নিয়েই ঘটনাস্থলেই ইডির উপর চড়াও হয় তারা।

ইডি জানিয়েছে, ওই গ্রামবাসীরা সবাই কেন্দ্র বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন, চিৎকার করে স্লোগান দিচ্ছিলেন ইডি কর্তাদের বিরুদ্ধেও। ইট-পাথর-লাঠি নিয়ে সরাসরি ইডি কর্তাদের উপর হামলা করেন তাঁরা।

ইডি তাদের প্রেস বিবৃতিতে স্পষ্ট লিখেছে, এই হামলায় তৃণমূল নেতা শাহজাহান এবং তার ঘনিষ্ঠরাই উসকানি দিয়েছে বলে সন্দেহ তাঁদের। একই সঙ্গে ইডি এও জানিয়েছে যে, এই হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন তাদের অফিসারেরা। ইডি লিখেছে, গ্রামবাসীদের ওই ভিড়টা ক্রমেই হিংস্র হয়ে উঠছিল। তাদের দেখে মনে হচ্ছিল তারা ইডি কর্তাদের প্রাণেও মারতে পারে। ইডি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর দলটিকে লক্ষ্য করে তেড়ে আসছিল তারা। প্রাণে বাঁচতেই নিজেদের কর্তব্য অসম্পূর্ণ রেখে ওই এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হয় দলটিকে।

ইডি আরও জানিয়েছে যে, পথে ইডি কর্তাদের থেকে তাঁদের টাকার ব্যাগ, নগদ টাকা, মোবাইল, ল্যাপটপ - সহ ব্যক্তিগত জিনিসপত্রও ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

শুক্রবার রাতে ওই প্রেস বিবৃতির শেষে ইডি লিখেছে, এই ঘটনায় জখম তিন ইডি আধিকারিক এই মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ইডি সংশ্লিষ্ট পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়ে এফআইআর নথিভুক্ত করতে বলেছে।

Advertisement
আরও পড়ুন