এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কাটিহার থেকে মালদহ স্টেশনের মধ্যে চলন্ত ডাউন কাটিহার এক্সপ্রেসে তবলাবাদক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে খুন করার পর আজিমগঞ্জ স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে গিয়েছিল গুজরাতে গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত সিরিয়াল কিলার রাহুল ওরফে ভোলু কর্মবীর জাঠ। পুলিশের কাছে ধৃতের দাবি, ওই স্টেশনে নামার পর সে অন্য একটি ট্রেনে চেপে ফের মালদহ ফিরে যায়। সেখান থেকে আবার একটি হাওড়ামুখী ট্রেন ধরে সে। হাওড়ায় নেমে ট্রেন ধরে খড়্গপুর যায় অভিযুক্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, খুনের পর কোন ট্রেনে সে সফর করে এ রাজ্যের বাইরে গিয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয় তাদের কাছে। তেমন ভাবে ভোলু যে সত্যি কথা বলছে তাও নিশ্চিত হতে পারছেন না তদন্তকারীরা। কারণ গুজরাত পুলিশের হাতে থাকা ওই অভিযুক্তকে জেরা করে ওই তথ্য মেলার পর এ রাজ্যের রেল পুলিশ মালদহ থেকে শুরু করে বাকি সব স্টেশনের সিসিটিভি খতিয়ে দেখেছে (আজিমগঞ্জ স্টেশনে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা নেই)। এমনকি হাওড়া স্টেশনের সব সিসিটিভি প্রাথমিক ভাবে খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাতে কোথাও তার উপস্থিতি চোখে পড়েনি বলে সূত্রের দাবি।
রেল পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই সিসিটিভির ফুটেজ নতুন করে খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। পুলিশের দুটি দল দুই ভাগে ওই কাজ করছে। ধৃত এর আগে জানিয়েছিল, কাটিহার ছাড়ার পর মালদহ ঢোকার আগে সে ওই তবলা বাদককে খুন করেছে। এ রাজ্যের রেল পুলিশের দল গুজরাতে ভোলুকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে বলে সূত্রের দাবি। গুজরাতের স্থানীয় আদালতে ট্রানজিটে এ রাজ্যে নিয়ে আসার জন্য আবেদন করা হলেও তাকে এখনই এ রাজ্যে নিয়ে আসা সম্ভব নয় বলে সূত্রের দাবি। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে গুজরাত পুলিশের দশ দিনের হেফাজতে রয়েছে ওই অভিযুক্ত।
এ দিকে গত কয়েক মাসে ঠিক কতগুলো খুন করেছিল সিরিয়াল কিলার রাহুল বা ভোলু তা নিয়েও কিছুটা ধন্দে গুজরাত পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে জেরার মুখে সে গত ২০ অক্টোবর থেকে ২৪ নভেম্বরের মধ্যে পাঁচ রাজ্যে পাঁচটি খুনের কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু তার পর থেকে নানা ভাবে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করছে ভোলু। তাই ওই রহস্য তৈরি হয়েছে। ওই রহস্যের জট কাটাতে গুজরাত পুলিশের তদন্তকারীরা বিভিন্ন রাজ্য এবং ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। জানার চেষ্টা চলছে যে ওই কায়দায় ট্রেনের ভিতর কোথায় কোথায় খুন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ওই বছরের শুরুর দিকে কেরল এবং ছত্তিশগঢ়ে ট্রেন থেকে দুটি দেহ উদ্ধার হয়। তার সঙ্গে ভোলুর যোগ রয়েছে কিনা তা জানার জন্য সেই রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে গুজরাতের ভালসাদ জেলা পুলিশ যোগাযোগ করেছে। তদন্তকারীরা জানান, ভোলুর মোবাইল খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। তবে সে বার বার ফোন নম্বর বদল করছে। তাই তদন্তে অসুবিধা হচ্ছে।