SSC Recruitment Case Verdict

চাকরি বাতিলে নিস্তব্ধ মামাভাগিনা! ‘সৎ রঞ্জন’-এর গ্রামে কারও ফোন বন্ধ, কারও বাড়ির দরজায় তালা

উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার মামাভাগিনা হল সেই ‘সৎ রঞ্জন’ ওরফে চন্দন মণ্ডলের গ্রাম। যে নাম নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত চলাকালীন বার বার সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছিল।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৩৩
Disappointment over Supreme Court verdict in Mamavagina village of Bagda

নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত চলাকালীন বার বার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিল রঞ্জন মণ্ডলের নাম। —ফাইল চিত্র।

ভরা দুপুরেও যেন অদ্ভুত আঁধার নেমে এসেছে মামাভাগিনায়। কারও ফোন বন্ধ। আবার কারও বাড়ির দরজায় তালা। গত বছর কলকাতা হাই কোর্টের চাকরি বাতিলের নির্দেশের পর গ্রামে যে হাহাকারের ছবি দেখা গিয়েছিল, বৃহস্পতিবার তা-ই যেন বদলে গেল নিস্তব্ধতায়!

Advertisement

উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার মামাভাগিনা হল সেই ‘সৎ রঞ্জন’ ওরফে চন্দন মণ্ডলের গ্রাম, যে নাম নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত চলাকালীন বার বার সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছিল। তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস ভিডিয়োবার্তায় ‘সৎ রঞ্জন’ নামে এক ব্যক্তির কথা জানিয়েছিলেন এবং অভিযোগ করেছিলেন, তিনি নাকি টাকার বিনিময়ে বহু চাকরি দিয়েছেন। পরে ‘রঞ্জন’ গ্রেফতারও হন। বৃহস্পতিবারের রায়ে যাঁদের চাকরি বাতিল হল, তাঁদের অনেকেই সেই রঞ্জনের গ্রাম এবং তার আশপাশের এলাকার বাসিন্দা।

গ্রামবাসীরাই জানান, এত লোক সেই সময় শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন যে, গ্রামের নামও মামাভাগিনা মাস্টার পাড়া হয়ে গিয়েছে। কেবল মামাভাগিনা নয়, আশপাশের চড়ুইগাছি কুরুলিয়া, রামনগর-সহ গোটা বাগদা ব্লকের প্রচুর ছেলেমেয়ের চাকরি চলে গিয়েছে। এক জনের কথায়, ‘‘যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের বেশ কয়েক জন অবৈধ ভাবে চন্দনকে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন বলেই মনে হয়।’’

Disappointment over Supreme Court verdict in Mamavagina village of Bagda

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় স্কুলে ক্লার্কের চাকরি পেয়েছিলেন গ্রামের মিঠুন বিশ্বাস। তাঁর মা ষষ্ঠী বিশ্বাস বলেন, ‘‘চন্দন মণ্ডলকে চাষের জমি বিক্রি করে দু’লক্ষ টাকা দিয়ে ছেলের চাকরি হয়েছিল। ছেলের বউ-মেয়ে রয়েছে। কী হবে এখন?’’

পুরনো স্মৃতি উস্কে গ্রামের বাসিন্দারা অনেকে জানান, কয়েক বছর আগে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত দূরদূরান্ত থেকে আসা লোকজনের দীর্ঘ লাইন পড়ত চন্দনের বাড়িতে। দাবি, সকলেই চাকরির জন্য যেতেন সেখানে। গ্রামবাসী শ্যামলী মণ্ডলেরও দাবি, চন্দনকে টাকা দিয়েই ছেলে ভীম মণ্ডলের চাকরি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্কুলে। বৃদ্ধার কথায়, ‘‘চাকরির জন্য চন্দনকে দু’লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম আমরা।’’

তবে সকলেই অবৈধ ভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, এ কথা মানতে রাজি নন গ্রামবাসীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, চাকরি যাওয়া এক তরুণীর কথায়, ‘‘পরীক্ষা দিয়ে নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলাম। এখন তো মুড়ি মিছরি এক হয়ে গেল! বাড়ির বাইরে বেরোতে লজ্জা হচ্ছে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন