শুক্রবার জ্যোতি বসুর প্রয়াণ দিবসে উদ্বোধন গবেষণাকেন্দ্রের। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ছবি: সংগৃহীত।
প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর ১৫ তম প্রয়াণ বার্ষিকী শুক্রবার। ওই দিনই নিউটাউনে জ্যোতি বসু গবেষণাকেন্দ্রের উদ্বোধন হবে। বৃহস্পতিবার সিপিএমের তরফে জানানো হয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের তরফে ওই অনুষ্ঠানে যেতে মুখ্যমন্ত্রীর অপারগতার কথা জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিপিএম নেতা রবীন দেব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ করছিলেন বিমান বসু। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে জানানো হয়েছে, উনি আসতে পারছেন না।’’ ঘটনাচক্রে, বিমানই জ্যোতি বসু গবেষণাকেন্দ্রের সভাপতি। সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন রবীন। শুক্রবার গবেষণাকেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন সিপিএমের পলিটব্যুরোর সমন্বয়ক প্রকাশ কারাট। থাকবেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
উল্লেখ্য, গত অগস্ট মাসে প্রয়াত হন মুখ্যমন্ত্রিত্বে বসুর উত্তরসূরি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ওই মাসেরই তৃতীয় সপ্তাহে নেতাজি ইনডোরে বুদ্ধদেবের স্মরণসভা করেছিল রাজ্য সিপিএম। কিন্তু সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সেলিম স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, মমতাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। তা হলে জ্যোতি বসু গবেষণাকেন্দ্রের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে আমন্ত্রণ জানানো হল কেন? এই প্রশ্নে সিপিএম নেতৃত্বের কোনও আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা মেলেনি। তবে দলের প্রথম সারির এক নেতার কথায়, ‘‘বুদ্ধ’দার স্মরণানুষ্ঠান হয়েছিল পার্টির আহ্বানে। তাই মমতাকে ডাকা হয়নি। কিন্তু জ্যোতি বসু গবেষণাকেন্দ্র পৃথক একটি প্রতিষ্ঠান। তারা ডাকতেই পারে। এর মধ্যে অন্য কিছু নেই।’’
দু’দিন আগেই বিমান জানিয়েছিলেন, গবেষণাকেন্দ্রে কী কী থাকবে। সেই প্রসঙ্গেই বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেছিলেন, একটি গ্যালারি তৈরি হবে। সেখানে শুধু বসু নন, তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য ব্যক্তিত্বও জায়গা পাবেন। সেই সূত্রেই প্রশ্ন উঠেছিল, বসু গবেষণাকেন্দ্রের গ্যালারিতে কি মমতা জায়গা পাবেন? কারণ, বসুর মুখ্যমন্ত্রিত্বের পর্বে দীর্ঘ সময় বঙ্গ রাজনীতিতে বিরোধী নেত্রী হিসাবে ছিলেন মমতাই। আবার বিভিন্ন সময়ে মমতাকে সল্টলেকে বসুর বাড়ি ইন্দিরা ভবনেও গিয়েছেন। বিমান সেই প্রশ্নে কোনও স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি। তাঁর উত্তর ছিল, ‘‘যে সব বিযয়গুলো রেলিভেন্ট (প্রাসঙ্গিক) থাকবে, সেগুলো নিশ্চয়ই থাকবে। ইরেলিভেন্ট (অপ্রাসঙ্গিক) বিষয় তো থাকে না। আজ না-হয় কাল আমরা চলে যাব। কিন্তু সমাজ সভ্যতার প্রগতির ধারা চলবেই।’’ বিমানকে ফের জিজ্ঞাসা করা হয়, তা হলে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন সেই গ্যালারিতে? প্রবীণ নেতা আবার ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-এ জবাব দেননি। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে অনুমান করে কিছু বলতে পারছি না। যা প্রাসঙ্গিক, তা-ই থাকবে। আমরা অপ্রাসঙ্গিক কোনও বিষয়ে যাব না।’’ হতে পারে মমতাকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল বলেই জবাবে ‘ধোঁয়াশা’ রাখতে চেয়েছিলেন বিমান। কিন্তু বৃহস্পতিবার নবান্ন জানিয়ে দিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকতে পারবেন না।