মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
চোখের চিকিৎসা করিয়ে ২৫ দিন পর গত রবিবার আমেরিকা থেকে শহরে ফিরেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর সোমবারই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাধিক জায়গায় তল্লাশিতে নামে ইডি। মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো উদ্যোক্তাদের সভায় সেই প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, ‘‘আমাদের বাড়িতে রোজই ওরা অত্যাচার করছে। কালকেও সারা রাত… আমাকে কেউ বলেনি। আমি আইনজীবীর কাছ থেকে জানতে পেরেছি। ছেলেটা পরশু দিন ফিরেছে। হঠাৎ করে চলে গেছে তার চার-পাঁচটা জায়গায়। সকাল ছ’টায় খবর পেলাম বাবুরা বেরিয়েছে।’’
আলিপুরের লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিসে ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি শেষে মঙ্গলবার সকালে বেরিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার আধিকারিকেরা। এই লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসেই চাকরি করতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। সংবাদমাধ্যমে তিনি বার বার বলতেন, ‘‘আমার সাহেবকে কেউ ছুঁতে পারবে না।’’ সাহেবের নাম জিজ্ঞাসা করায় তিনি জবাব দিতেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ এ ছাড়া সুজয়কৃষ্ণের মেয়ে পারমিতা চট্টোপাধ্যায় এবং জামাই দেবরূপ চট্টোপাধ্যায় যেখানে থাকেন, সেখানেও সোমবার তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর-২ ব্লকের সাঁজুয়াতেও তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। যে ভাবে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা তল্লাশি চালাচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কোথাও কোথাও তালা ভেঙেও ঢুকছে। চা করার লোক থাকলেও বার করে দেওয়া হচ্ছে। কে গ্যারান্টি দেবে ওরা নিজেরাই বিস্ফোরক, বন্দুক বা ব্যাগ ভর্তি টাকা রেখে দেবে না?’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘কে কাকে বিয়ে করবে, কার জন্ম কোথায়, কার ক’টা বাচ্চা—সব ওদের জানতে হবে।’’
তল্লাশির মাঝে একটা রটনা তৈরি হয়েছিল, মমতার বাড়িতেও ইডি গিয়েছে। সে খবর মমতার কানেও পৌঁছয়। তবে নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘বাজে কথা বলে লাভ নেই, ওরা হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে যায়নি।’’ প্রসঙ্গত, ৩০, বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটেই মমতা থাকেন। তাঁর বাড়িতে না গেলেও, তাঁর পরিবারের লোকজনকে যে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ‘তিষ্ঠতে’ দিচ্ছে না, তা-ও স্পষ্ট করেছেন মমতা।