Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: কয়লা ও গরু পাচারে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজ্যকে, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতার

রানিগঞ্জের ধসপ্রবণ এলাকায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় বর্তাবে কেন্দ্রের উপর, এই বার্তা কেন্দ্রকে জানানোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৫৬
কয়লা-গরু পাচার নিয়ে সিবিআই-ইডির গতিবিধির কড়া সমালোচনা করলেন মমতা।

কয়লা-গরু পাচার নিয়ে সিবিআই-ইডির গতিবিধির কড়া সমালোচনা করলেন মমতা। ছবি পিটিআই।

রানিগঞ্জের ধসপ্রবণ এলাকায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় বর্তাবে কেন্দ্রের উপর, এই বার্তা কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে এই নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি মমতা কয়লা-গরু ‘পাচার’ নিয়েও সরব হন। তাঁর নির্দেশ, ভিন রাজ্য থেকে এ রাজ্য দিয়ে কয়লা-গরুর যাতায়াত বন্ধ করতে হবে। এই গতিবিধি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে এ দিন কয়লা-গরু পাচার নিয়ে সিবিআই-ইডির গতিবিধির কড়া সমালোচনা করেন মমতা। যদিও গরু পাচারের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘হাস্যকর’ বলে দাবি করেছে বিরোধীরা।

রানিগঞ্জের ধসপ্রবণ এলাকার মানুষদের পুনর্বাসন প্রকল্পের অগ্রগতি কতদূর এগিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কাছে তা জানতে চান মমতা। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম তাঁকে জানান, পুনর্বাসন খাতে প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে কোল ইন্ডিয়া। সেই তথ্যে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, “রানিগঞ্জে তো বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কথা কোল ইন্ডিয়ার। টাকা বন্ধ করে দিয়েছে, তা হলে তো প্রচুর মানুষ মারা যাবে। মানুষ মারা গেলে কিন্তু দায় তাদের হবে, তা জানিয়ে চিঠি লেখ। কয়লার টাকা নেবে আর মানুষ মরে যাবে, তাঁদের দেখবে না!” এই প্রসঙ্গেই মমতার অভিযোগ, অসম থেকে অবৈধ কয়লা আসছিল, সেটা আটকানো হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, উত্তরপ্রদেশ থেকে এ রাজ্য হয়ে গরু যাবে, তার দায় রাজ্য সরকার নেবে কেন। মমতার বক্তব্য, “শুধু ইডি-সিবিআই দিয়ে কয়েকটা রাজনৈতিক লক্ষ্যে গ্রেফতার করলেই হয়ে যাবে? কেন আমার রাজ্যে ঢুকবে অবৈধ কয়লা! উত্তরপ্রদেশ থেকে গরু যাবে আমার রাজ্য দিয়ে, আর গরু পাচারে এ রাজ্যের দোষ হবে! এটা আমরা মেনে নেব না।”

Advertisement

গোটা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে দায়ী করে মমতা বলেন, “বিএসএফ বর্ডার দেখছে। অন্য রাজ্য থেকে কয়লা আমার রাজ্য দিয়ে যাবে কেন! প্রয়োজন বুঝে আমরা অনুমোদন দেব। তোমাদের (কেন্দ্রের) কী আন্ডারস্ট্যান্ডিং...আমাদের বিরুদ্ধে সিবিআই আর নিজেরা সব ভাই ভাই!”

মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধীতা করে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়ার পথে তো পুলিশ থাকে। সেখানে বিএসএফের কী দায়? অপরাধীদের সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজশ ছাড়া গরু পাচার সম্ভব নয়। ক্ষমতা থাকলে এই কারবার, কেনা-বেচা বন্ধ করে দেখান!’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘বোঝা যাচ্ছে, অনুব্রত মণ্ডলকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী মরিয়া হয়ে উঠেছেন! যখন বিহার বা উত্তরপ্রদেশ থেকে আসছে, সেই সীমানায় তো পুলিশ থাকে, বিএসএফ নয়! মুখ্যমন্ত্রীর দলের বাহিনীর প্রশ্রয়ে গরুকে সীমান্ত পার করানো হচ্ছে। অপরাধীদের সঙ্গে পাহারাদার সংস্থারও যোগসাজশ থাকছে, তারাও ধরা পড়ছে। কেন এই গরু পাচারের আদর্শ কেন্দ্র বলে উত্তরপ্রদেশ বা মধ্যপ্রদেশের লোক বাংলাকে বেছে নিচ্ছে, সেটাই তো বড় প্রশ্ন!’’

এ দিনের বৈঠকে মুখ্যসচিব জানান, অন্য রাজ্য থেকে এ রাজ্য হয়ে কয়লা-গরুর যাতায়াত সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার নবান্নে পূর্বাঞ্চলীয় কাউন্সিলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কর্তারাও ছিলেন। বৈঠকেই এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যসচিব।

আরও পড়ুন
Advertisement