আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ। মঙ্গলবার হাই কোর্টে সিবিআই জানিয়েছে, এই মামলায় তদন্ত প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় শীঘ্রই বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এ কথা জানিয়েছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। এবিষয়ে রাজ্যের থেকেও অনুমোদন মিলেছে বলে জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের বক্তব্য শুনে বিচারপতি সাত দিনের মধ্যে চার্জ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে বলেন। এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ।
আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি প্রথম হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। সেই মামলারই মঙ্গলবার শুনানি হয় বিচারপতি ঘোষের এজলাসে। মঙ্গলবার হাই কোর্টে একটি মুখবন্ধ খামও জমা দিয়েছে সিবিআই। আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্ত চালাচ্ছে অপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-ও। তারা জানিয়েছে, তদন্ত এখনও চলছে। বিচারপতি ঘোষ দ্রুত তদন্ত শেষ করার জন্য বলেছেন ইডিকে।
সিবিআইয়ের তরফে আদালতে জানানো হয়, আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ার জন্য অভিযুক্তদের থেকে সম্মতিও নেওয়া হয়েছে। দ্রুত বিচার শুরু হবে বলে হাই কোর্টে জানায় সিবিআই। বস্তুত, গত বছরের ২৩ অগস্ট আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। গত ২৯ নভেম্বর চার্জশিট জমা করে তদন্তকারী সংস্থা। ইডির আইনজীবী মঙ্গলবার হাই কোর্টে জানান, এখনও পর্যন্ত ২২ জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। বেশ কয়েক জনকে জেরাও করা হয়েছে।
আরজি কর হাসপাতালে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপারের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনার নামে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছিল আরজি করে। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিই ‘ঘনিষ্ঠ’দের টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছিলেন।
আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় গত ২৯ নভেম্বর আলিপুর আদালতে চার্জশিট জমা করে সিবিআই। চার্জশিটে নাম রয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের। এ ছাড়াও এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া আরও চার জনের নাম চার্জশিটে রয়েছে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রথম গ্রেফতার হয়েছিলেন সন্দীপ। টানা কয়েক দিন সিবিআই দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে এই মামলার সূত্র ধরে বিপ্লব সিংহ, আফসার আলি এবং সুমন হাজরাকেও গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা। এই মামলায় শেষ গ্রেফতার আশিস পাণ্ডে। প্রত্যেকেই বর্তমানে জেলবন্দি।