সিবিআইয়ের অভিযোগ, রাজু ওই লুটের টাকার অন্যতম ভাগীদার এবং সুবিধাভোগী। ফাইল চিত্র।
বর্ধমান সানমার্গ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে এক বেআইনি লগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের টাকা নয়ছয়ের তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে সিবিআইয়ের দাবি। সেই সব তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, রাজ্যের শাসক দলের শীর্ষ স্তরের কিছু নেতার গচ্ছিত কোটি কোটি টাকা উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানি এবং একাধিক বিধায়ক, কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ীর মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়েছিল।
সিবিআইয়ের অভিযোগ, রাজু ওই লুটের টাকার অন্যতম ভাগীদার এবং সুবিধাভোগী। তাঁর নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যবসা প্রচুর টাকা বিনিয়োগের পাশাপাশি বিভিন্ন বিদেশি ব্যাঙ্কে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাচারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
তদন্তকারীদের দাবি, ওই বেআইনি সংস্থার আমানতকারীদের ভুল বুঝিয়ে যে-টাকা তোলা হয়েছিল, তা মূলত শাসক দলের এক শীর্ষ নেতার মাধ্যমে রাজু, তাঁর ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন বিধায়ক এবং বেশ কয়েকটি পুরসভার কয়েক জন কাউন্সিলরের কাছে জমা রাখা হয়। পরে তা বিভিন্ন সম্পত্তিতে বিনিয়োগ এবং বিদেশে পাচার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, মূলত ২০১৪ ও ২০১৬ সালের মধ্যে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থায় ‘প্রোটেকশন মানি’ হিসাবে ৫০ থেকে ১০০ কোটি টাকা লুট করা হয়েছিল। সেই সময় উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর ও কাঁচরাপাড়া এলাকার বাসিন্দা, শাসক দলের এক শীর্ষ নেতার মাধ্যমে টাকা লুট করা হয়। সেই নেতা এখন নিজেকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
তদন্তকারীদের দাবি, রাজুকে জেরা করে টাকা নয়ছয়ের ঘটনার সঙ্গে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার হয়েছে রাজুর বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বেশ কিছু নথিও। সেগুলি যাচাই করা হচ্ছে। অভিযোগ, সেই লুটের টাকায় কলকাতা, বীজপুর ও হালিশহরে প্রচুর জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে। প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়।
রবিবার সকালে বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। তল্লাশি চলে সুবোধের ভাই, কাঁচরাপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান কমল অধিকারীর বাড়িতেও। সুবোধ আর কমল দু’জনেই রাজু-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত।