CPM

CPM-Congress: কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নয়, ফের একলা চলার নীতি নিতে পারে সিপিএম, শুরু আলোচনা

জেলায় জেলায় বামফ্রন্ট আলোচনা করে নিজেরা কোথায় লড়াই করতে চায়, সেই সব ওয়ার্ড চিহ্নিত করবে। রাজ্য বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে ১৫ নভেম্বর।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৫৭
সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, পার্টি কংগ্রেসের আগে এখন আচমকা দলের লাইন পরিবর্তন হচ্ছে না।

সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, পার্টি কংগ্রেসের আগে এখন আচমকা দলের লাইন পরিবর্তন হচ্ছে না। ফাইল চিত্র।

কখনও আসন সমঝোতা, কখনও জোটের নাম দিয়ে কংগ্রেসের হাত ধরেই লড়াই হয়ে আসছে সাড়ে পাঁচ বছর ধরে। এ বার বামেরা ফের একক ভাবে লড়াইয়ের পরীক্ষায় যেতে পারে কি না, পুরভোটের আগে সেই প্রশ্ন উঠে এল সিপিএমে। সাম্প্রতিক কালে যা এই প্রথম। বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধিতার মূল রাজনৈতিক লক্ষ্যের কথা মনে করিয়ে দিয়েই সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য পুরভোটে জোটের প্রশ্নে জেলা নেতৃত্বের মতকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন।

আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে মঙ্গলবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে দলের সম্মেলন প্রক্রিয়া নিয়ে মূল আলোচনা ছিল। শাখা ও এরিয়া কমিটির সম্মেলন কেমন হচ্ছে, তার রিপোর্ট দিতে গিয়েই বেশ কিছু জেলার প্রতিনিধিরা কংগ্রেস এবং আইএসএফের সঙ্গে জোটের প্রসঙ্গ এনেছেন। দলীয় সূত্রের খবর, জোট করে বামেদের যে বিশেষ লাভ হয়নি, এই তথ্য সামনে এনে নিচু তলার সম্মেলনে সমালোচনার সুর শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কিছু জেলার নেতারা। তাঁদের যুক্তি, ২০১৬ সালে প্রথম আসন সমঝোতা হওয়ার পরে লাভবান হয়েছিল কংগ্রেস। বহু ক্ষেত্রে বামেদের ভোট কংগ্রেসে গেলেও উল্টোটা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। পরে আবার জোট করে লড়ে বাম ও কংগ্রেস, উভয় পক্ষেরই ভরাডুবি হয়েছে। এই সূত্রেই শান্তিপুরে সাম্প্রতিক উপনির্বাচনের প্রসঙ্গ এনেছেন কেউ কেউ। ওই কেন্দ্রে ৬ মাস আগের বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় বামেদের ভোট অনেকটা বেড়েছে জোট ছাড়াই।

Advertisement

রাজ্য কমিটির জবাবি ভাষণে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, পার্টি কংগ্রেসের আগে এখন আচমকা দলের লাইন পরিবর্তন হচ্ছে না। বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ সব ধরনের শক্তিকে একজোট করার রাজনৈতিক লক্ষ্য থেকে দলের সরে আসার প্রশ্ন নেই। তবে পুরভোটের মতো নির্বাচনে স্থানীয় পরিস্থিতির উপরে অনেক সমীকরণ নির্ভর করে। নাগরিক সমিতি বা নানা ধরনের মঞ্চের নামেও পুরভোটে কোনও কোনও ক্ষেত্রে লড়াই হয়। দলের মূল রাজনৈতিক লক্ষ্য অক্ষুণ্ণ রেখে কোথায় জোট করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, কোথায় হবে না, তা জেলা নেতৃত্বকে ভেবে দেখার কথা বলেছেন সূর্যবাবু। দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, স্থানীয় স্তরেও বিজেপি বা তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার যে প্রশ্ন নেই, তা মনে রেখেই ভোটের কৌশল ঠিক করতে বলা হয়েছে আলিমুদ্দিনের তরফে।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘দলের তরফে আমাদের রাজনৈতিক মনোভাব বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সব শক্তিকে সঙ্গে নিয়েই চলার। তার পরেও স্থানীয় পরিস্থিতির উপরে সিদ্ধান্ত অনেকটা নির্ভর করছে। যেখানে কংগ্রেস বা অন্য কেউ বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভাল লড়াই দিতে পারবে, সেখানে জোর করে আমাদের প্রার্থী দেওয়ার নিশ্চয়ই প্রয়োজন নেই।’’ জেলায় জেলায় বামফ্রন্ট আলোচনা করে নিজেরা কোথায় লড়াই করতে চায়, সেই সব ওয়ার্ড চিহ্নিত করবে। রাজ্য বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে ১৫ নভেম্বর। কংগ্রেসও পুরভোটে জোটের ব্যাপারে জেলা নেতৃত্বের মত চেয়েছে।

ডিসেম্বর মাস থেকে সিপিএমের জেলা সম্মেলনের পর্ব শুরু হচ্ছে। দার্জিলিং জেলা থেকে ওই সম্মেলনের পর্ব শুরু হবে এবং জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে হাওড়ায় শেষ হবে— এই নির্ঘণ্ট এ দিন রাজ্য কমিটিতে চূড়ান্ত হয়েছে। কলকাতায় ১৯ ডিসেম্বর পুরভোট ধরে নিয়ে যাদবপুর, সন্তোষপুর এলাকার কিছু এরিয়া কমিটির সম্মেলনের তারিখ বদল হবে। অন্যান্য জেলাকেও পুরভোট মাথায় রেখে সম্মেলনের সূচি রদবদলের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। বীরভূমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা প্রয়াত হওয়ায় রাজ্য কমিটির সদস্য গৌতম ঘোষ আপাতত ওই জেলা কমিটির কাজ সামলাবেন।

আরও পড়ুন
Advertisement