Justice Rajasekhar Mantha

অভিযুক্তদের হাজির করুন, বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টার নিয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিল হাই কোর্ট

জানুয়ারি মাসে হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে আদালত চত্বরে আইনজীবীদের বিক্ষোভ চলাকালীনই তাঁর নামে বেনামী পোস্টার পড়ে। এলাকা ছেয়ে যায় তাঁর সম্পর্কে নিন্দামূলক পোস্টারে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৩ ১৬:২৫
Calcutta High Court’s direction to Kolkata Police on postering against Justice Rajasekhar Mantha

বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টার লাগানো নিয়ে কলকাতা পুলিশকে নির্দেশ হাই কোর্টের। ফাইল চিত্র।

বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে বেনামি পোস্টার এবং কোর্ট রুম অবরোধের ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলার শুনানি ৩ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চেই হবে। তবে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ৬ জনকে পরবর্তী শুনানির দিন হাজির থাকতে হবে। তাঁদের হাজিরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে কলকাতা পুলিশকে। বুধবার এমনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশের বৃহত্তর বেঞ্চেই হবে পরবর্তী শুনানি।

Advertisement

এই ৬ জনের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগানোর অভিযোগ রয়েছে। এই মামলায় তাঁদের নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা আদালতে আসেননি। বিচারপতি মান্থার কোর্ট রুম ঘেরাও করার অভিযোগ উঠেছিল যে সব আইনজীবীর বিরুদ্ধে, সিসিক্যামেরার ফুটেজে তাঁদের শনাক্ত করা গিয়েছে। তাঁদের নাম মুখবন্ধ খামে বার অ্যাসোসিয়েশনকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই মামলায় তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেয় কলকাতা পুলিশ। রাজ্যের সরকারি কৌঁসুলির উদ্দেশে বিচারপতি শিবজ্ঞানমের মন্তব্য, “এখন এই রিপোর্ট আমরা খুলে দেখছি না। তদন্তের নামে আদালতের সঙ্গে লুকোচুরি খেলবেন না। তদন্ত কী গতিতে এগোচ্ছে সেটা আমরা দেখব। শামুকের গতিতে না কি ঘোড়ার গতিতে?” রাজ্যকে বিচারপতি আরও বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের সম্মান জড়িয়ে রয়েছে। আশা করি, সঠিক তথ্য দিয়ে সাহায্য করবেন। সঠিক নাম দিন। একজন দোষ করেছেন, কিন্তু আর এক জনের নাম দেওয়া ঠিক হবে না।” আগামী ২৭ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

গত জানুয়ারি মাসে হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে আদালত চত্বরে আইনজীবীদের বিক্ষোভ চলাকালীনই তাঁর নামে পোস্টার পড়ে তাঁর পাড়ায়। দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কে বাড়ি বিচারপতি মান্থার। সেই এলাকা ছেয়ে যায় তাঁর সম্পর্কে নিন্দামূলক পোস্টারে। যেখানে বিচারপতির ছবির উপরে লেখা ‘লজ্জা’। পাশে তাঁর নাম উল্লেখ করে লেখা ‘‘বিচারপতি মান্থা বিচারের নামে কলঙ্ক’’। এই পোস্টার লাগানোর ঘটনাতে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চায় হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি এবং বিচারপতি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ৭ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে রিপোর্ট দিতে হবে রাজ্যকে। তার পাল্টা হলফনামা দেবেন মামলাকারীও। এই ঘটনায় গত ১০ জানুয়ারি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন বিচারপতি মান্থা। মামলাটি যায় তিন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে।

গত জানুয়ারি মাসে বিচারপতি মান্থার এজলাসের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আইনজীবীদের একাংশ। পরে বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটের প্রস্তাবও আনেন বার কাউন্সিলের কলকাতা শাখার সদস্যদের কয়েক জন। চলতে থাকে এজলাসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ। থমকে যায় বহু মামলার শুনানিও। এমনকি, হাই কোর্ট চত্বরে আইনজীবীদের দু’টি দলের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও দেখা যায়। এই ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে আইনজীবীদের কেন্দ্রীয় সংগঠন ভারতীয় বার কাউন্সিল।

আরও পড়ুন
Advertisement