জামিন পেলেন নিরাপদ সর্দার। — ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে অন্তর্বর্তী জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবারই তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে বিচারপতি পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার নিরাপদ জেল থেকে মুক্তি না পেলে তা আদালত অবমাননার শামিল হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চ।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয় সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ককে। তার পর থেকে একটানা ১৭ দিন ধরে তিনি জেলবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। গ্রেফতারির পরেই নিরাপদের বাড়ির লোকেরা জামিনের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই মামলায় মঙ্গলবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চ ১০ হাজার বন্ডের বিনিময়ে নিরাপদের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে। তাঁকে কোনও ভাবেই আর জেলে বন্দি রাখা যাবে না বলেও জানিয়েছে আদালত। মঙ্গলবারই নিরাপদকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
১৭ দিন ধরে জেলবন্দি থাকার পর অবশেষ হাই কোর্টের হস্তক্ষেপে জামিন পেলেন নিরাপদ। তবে এই মামলার শুনানিতে বিচারপতিদের ভর্ৎসনার মুখেও পড়়তে হয়েছে পুলিশকে। সূত্রের খবর, এই মামলায় বেশ কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে আদালত। তার প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের কাছেও রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতিরা। ২৯ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন এসপিকে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এ ছাড়া নিরাপদকে নিম্ন আদালতের প্রতিটি শুনানিতে হাজির থাকতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কোনও নথি বা তথ্য নষ্ট করা যাবে না বলেও নিরাপদকে জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতিরা।
নিরাপদের গ্রেফতারি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে মঙ্গলবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চ। বেঞ্চ বলে, ‘‘এটা আদালতের কাছে আশ্চর্যজনক যে, একটা অভিযোগের ভিত্তিতে একজন নাগরিককে গ্রেফতার করল পুলিশ! যদি একটা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করে তাহলে সেই একই প্রক্রিয়ায় পুলিশকে কেন গ্রেফতার করা হবে না?’’ তার পরেই আদালত প্রশ্ন তোলে, ‘‘এত দিন যে একজন নাগরিককে গ্রেফতার করে রাখা হল, তার ক্ষতিপূরণ কে দেবে?’’ পাশাপাশি এই প্রক্রিয়ায় পুলিশ আদৌ কাউকে হেফাজতে নিতে পারে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। আদালত সূত্রে খবর, তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরার ঘনিষ্ঠ ভানু মণ্ডলের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি নিরাপদকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ জন্য এফআইআর দায়ের হয়েছিল গত ৯ ফেব্রুয়ারি।
সন্দেশখালিকাণ্ডে ইতিমধ্যেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দার, অজিত মাইতিকে। গ্রেফতার হয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহও। গত ১১ ফেব্রুয়ারি একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদকেও। মঙ্গলবারই তিনি জামিন পেলেন।