‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ যাঁরা, তাঁদের বেতন ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) ২৬ হাজার চাকরি (২৫ হাজার ৭৩৫) বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্ট যা যা নির্দেশ দিয়েছিল, সেগুলি কেন কার্যকর করা হচ্ছে না? প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে কেন দেরি হচ্ছে, এক দিনের মধ্যে এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে তা জানাতে বলা হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলাতেই আদালত জানতে চায়, কেন দেরি হচ্ছে। এসএসসি-র আইনজীবী কয়েক দিন সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু এক দিনের বেশি সময় দেয়নি আদালত। বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিনের মধ্যে কমিশন এবং পর্ষদকে আদালতের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
চাকরি বাতিলের মামলায় হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। বাতিল করে দেওয়া হয় ২০১৬ সালের এসএসসি-র সম্পূর্ণ প্যানেল। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, যাঁরা ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ বা ‘দাগি’ (টেন্টেড), তাঁদের বেতনও ফেরত দিতে হবে। অভিযোগ, সেই নির্দেশ কার্যকর করতে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। বরং বেতনের তালিকায় এখনও ‘অযোগ্য’দের নাম আছে। এ ছাড়া, এসএসসি-কে উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট প্রকাশ করতেও বলেছিল আদালত। অভিযোগ, তা-ও করা হয়নি। এই মর্মে হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা হয়। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি বসাক এবং বিচারপতি রসিদির ডিভিশন বেঞ্চে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘‘দাগিদের বেতন দিলে তো সমস্যা!’’ আদালতের পর্যবেক্ষণ, চাকরি বাতিলের মামলায় হাই কোর্টের যে সমস্ত নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট পরিবর্তন করেছে, তাতে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না। কিন্তু বাকি নির্দেশ কেন কার্যকর করা হয়নি? প্রশ্ন তোলে ডিভিশন বেঞ্চ। মূল মামলাকারীদের আইনজীবী ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত, ফিরদৌস শামিম।
সিবিআইকেও একই সঙ্গে আদালতের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, ‘দাগি’দের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে তদন্তকারী সংস্থা। সেই রায়ই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল ধীরাজ ত্রিবেদীর উদ্দেশে বিচারপতি বসাকের প্রশ্ন, কেন অযোগ্যদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি? কী ভাবে তাঁরা চাকরি পেলেন? কাদের ঘুষ দিয়েছিলেন? পরবর্তী শুনানির দিন এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর আদালতে জানাতে হবে সিবিআইকেও।