West Bengal Assembly Election 2021

বিধায়ক পদ ছেড়ে সংসদেই নিশীথ-জগন্নাথ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে ঐকমত্য রাজ্য বিজেপি

রাজ্য বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই দুই সাংসদকে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২১ ০৮:৫৮

ফাইল চিত্র।

সাংসদ পদেই বহাল থাকবেন নিশীথ প্রামাণিক এবং জগন্নাথ সরকার। ছেড়ে দেবেন দিনহাটা ও শান্তিপুরের বিধায়ক পদ। এমনটা চেয়েছিলেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, গত শনিবার দিল্লিতে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনার পরেই সিদ্ধান্ত পাকা হয়েছে। সোমবার কলকাতায় দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে এই বিষয়ে বিশেষ আলোচনা না হলেও দিনহাটা ও শান্তিপুরে উপনির্বাচনের জন্য ভিতরে ভিতরে প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা রয়েছে বিজেপি-র। তবে এখনই দলের কোনও নেতা এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নন। তবে সেটাই যে হতে চলেছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের একাধিক শীর্ষ নেতা।

বিধানসভা নির্বাচনে লোকসভার ৪ সাংসদকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। ফলাফলে দেখা গিয়েছে, তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু মাত্র ৫৯ ভোটের ব্যবধানে হলেও তৃণমূলের উদয়ন গুহকে হারিয়ে দিনহাটা থেকে বিধায়ক হয়েছেন নিশীথ। আবার শান্তিপুরে রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ ১৫,৮৭৮ ভোটে জয়ী হয়েছেন।

Advertisement

ইতিমধ্যেই বিজেপি-র ৭৭ জন বিধায়কের সিংহভাগই বিধানসভায় এসে শপথ নিয়েছেন। কিন্তু সেই তালিকায় এখনও পর্যন্ত নেই নিশীথ ও জগন্নাথ। তা নিয়ে জল্পনা চললেও দু’জনেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, দল‌ যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই মেনে নেবেন তাঁরা। রাজ্য বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই দুই সাংসদকে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।’’ তবে কবে তাঁরা বিধায়ক পদ ছাড়বেন সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

তবে বিজেপি সূত্রে যা খবর তাতে এখনই বিধানসভায় এসে ‌শপথ নেবেন না নিশীথ এবং জগন্নাথ। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী, শপথ নিয়ে নিলে পরবর্তী দু’সপ্তাহের মধ্যে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে খুব বেশি দিন সময়ও নিতে পারবেন না। নিয়ম অনুযায়ী আগামী ৬ মাসের মধ্যে যে কোনও একটি পদ ছাড়তেই হবে।

নিশীথ-জগন্নাথ বিধায়ক পদ ছেড়ে দিলে দিনহাটা ও শান্তিপুরে উপনির্বাচন হবে। তবে রাজ্যে আরও কমপক্ষে দু'টি আসনে উপনির্বাচন হবেই। খড়দহ আসনে জয়ী তৃণমূলের কা‌জল সিংহের মৃত্যু হয়েছে ফল ঘোষণার আগেই। সেখানে উপনির্বাচন করতে হবে। নন্দীগ্রামে বিজেপি জয় পাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কোনও একটি আসন থেকে জিতে আসতে হবে। সোমবার শপথ নেওয়া অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও এ বার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। সেই কারণে মমতা ও অমিতের জন্য দু'টি আসনে উপনির্বাচন হবে। তাঁদের একজন খড়দহে প্রার্থী হলেও অন্য একটি কেন্দ্রে কোনও বিধায়ককে পদ ছাড়তে হবে। তবে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের পক্ষে এ ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিতও দেওয়া হয়নি।

বিজেপি-র সার্বিক ফল আশানুরূপ না হলেও নিশীথ ও জগন্নাথের লোকসভা এলাকায় পদ্মের দখল রয়েছে। কোচবিহার জেলায় মোট ৯ আসনের মধ্যে ৭টিতে জয় পেয়েছে দল। জগন্নাথের নদিয়া ‌জেলায় বিজেপি যেমনটা আশা করেছিল তার তুলনায় অনেক খারাপ ফল। ১৭-র মধ্যে ৯ আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি। তবে জগন্নাথের লোকসভা এলাকায় পদ্মের ফল ভালই। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভার মধ্যে নবদ্বীপ ছাড়া সবগুলিতেই জিতেছে বিজেপি। বাংলায় দল ক্ষমতায় এলে বিজেপি নেতৃত্বের ভাবনা ছিল কোচবিহার ও রানাঘাট লোকসভা আসনে উপনির্বাচনে দলের নতুন কোনও প্রার্থীকে জিতিয়ে আনা হবে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্য রকম। তাই উপনির্বাচনে দিনহাটা ও শান্তিপুরে দখল কায়েম রাখা বিজেপি-র কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। কারণ, সাধারণ ভাবে দেখা যায় উপনির্বাচনে শাসকদল‌ের লড়াইটা শুরু হয় কিছুটা এগিয়ে থেকে।

আরও পড়ুন
Advertisement